সদ্য নিয়োগ পাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার অপসারণের জোর দাবি উঠেছে। তবে নিজেকে অপসারণের দাবি প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে খোলামেলা কথা বলেন ফারুকী।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে কর্মক্ষেত্রের নিজের প্রথম দিনে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যেকে তার মতামত প্রকাশ করতে পারেন এটার উত্তর দেয়ার প্রয়োজন আমার নেই। আমি উপদেষ্টা হব কি হব না সে বিষয়ে গতকাল (১০ নভেম্বর) সকাল পর্যন্তও আমি না ছিলাম।
কিন্তু মিস্টার ইউনূসের সঙ্গে কাজ করা লোভনীয় বিষয়। আমার অনেক আগে থেকেই তার সঙ্গে কাজ করার সম্পর্ক রয়েছে। তার কাজ সম্পর্কে আমার ধারণা রয়েছে। তাই আমি সম্মতি দিয়েছি। কারণ ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্ম সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দুটি সুবিধা ভোগ করলে আমি গর্ববোধ করব।
জবি ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দিতে মন্ত্রণালয়ের আপত্তি নেই: শিক্ষা উপদেষ্টা
কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন কি না-এ প্রসঙ্গে ফারুকী স্পষ্ট করে বলেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাসের কারণে ২০১৪ সালে আমি শিবির, জামায়েতী হয়েছিলাম।
অনেকে আমাকে মনে করেন বিএনপি, জামায়েতী, আওয়ামী লীগার। আমাকে আওয়ামী লীগ গালি দেয়, বিএনপি গালি দেয়, জামায়াত গালি দেয়। আমি এগুলোতে অভ্যস্ত এবং ভালোই আছি।
ফারুকী আরও বলেন, মানুষের মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। কেউ যদি মনে করে আমি অমুক। এক্ষেত্রে আমি কমন সেন্স খাটাতে হবে বলে আমি মনে করি। একটা লোককে একইসঙ্গে চার পার্টি গালি দিচ্ছে, কেন তারা মনে করছে তাদের দলের নই আমি।
আসলে আমি সত্যি কারও দলের লোক না। আমি আমার লোক। আমি যেটাকে যেই মুহূর্তে ঠিক মনে করি, ওই মুহূর্তে ওই কথাটা বলি। আমার কারো প্রতি কোনো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নাই। কখনও ছিল না, কোনো কালে থাকবেও না। কারণ আমি শিল্পী, আমার কোনো দল নেই।
প্রসঙ্গত, গত রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথ নেন উপদেষ্টা ফারুকী। এরপর রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়। এরপর ‘এক-দুই-তিন-চার ফারুকী তুই গদি ছাড়’, ‘ফারুকীদের আস্তানা ভেঙে দাও ঘুরিয়ে দাও’, ‘বাংলাদেশে হবে না মুজিববাদের ঠিকানা’-এমন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়ামের সঞ্চালনায় সমাবেশে শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টা ফারুকীর বিরুদ্ধে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। বক্তব্য শেষে বটতলা থেকে তাদের মিছিল শহীদ সালাম-বরকত হল ঘুরে পুনরায় বটতলায় এসে শেষ হয়।