ইসকন এনজিও প্রতিষ্ঠান হলেও তাদের হিসাবের দীর্ঘদিন ধরে কোনও অডিট হয় না। তাদের আয়-ব্যয়ের উৎস কেউ জানে না। অতি দ্রুত স্বাধীন কমিশন গঠন করে ইসকনের আর্থিক আয়ের উৎস প্রকাশ করতে হবে বলে দাবি তুলেছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (৪ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি এই দাবি জানান।
শরীফ ওসমান বিন হাদি বলেন, ইসকন নিজেদের এনজিও দাবি করলেও তাদের কার্যক্রম রাজনৈতিক। কোনও এনজিও ঢাকা অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিতে পারে না। ঢাকা অচল করে দেওয়ার ঘোষণা তাদের রাজনৈতিক তৎপরতা প্রকাশ করে।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এনজিও কখনও পলিটিক্স করতে পারবে না, ঢাকা ঘেরাও করতে চাওয়া, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের বিরুদ্ধে সভা করে কথা বলা এবং দাবি তোলা সেটা কি এদেশের রাজনৈতিক দল ছাড়া আর কেউ করতে পারে? এটা কি একটি এনজিও করতে পারে? এনজিও না হলে ইসকন কি রাজনৈতিক নাকি ধর্মীয় সংগঠন এটা তাদের পরিষ্কার করতে হবে।
আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে অথচ এই ইসকন তখন সামান্য বিবৃতিটিও দেয়নি বলে দাবি করে তিনি বলেন, ইসকন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট স্থানে তাদের বড় বড় সমাবেশগুলো করছে, দাবি তুলছে। এর মাধ্যমে মূলত তারা একটা জিনিস হাসিল করতে চায়, মাইনোরিটি সাপ্রেশন হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে তারা মূলত আমেরিকাকে ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে আনার চেষ্টা করে চলছে।
জয় শ্রীরাম স্লোগানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অসংখ্য হিন্দু ভাই-বোনদের মাঝখানে বড় হয়েছি। আমাদের বাসার আশেপাশে সব সময় দুর্গা কিংবা কালী মন্দির দেখেছি। কখনও জয় শ্রীরাম স্লোগান শুনিনি। বিগত ১৬ বছরে জয় শ্রীরাম স্লোগানকে নর্মালাইজ করার চেষ্টা চলছে ইসকনের মাধ্যমে। এই স্লোগান তুলেই বিজেপি অসংখ্য মুসলমান নরনারী হত্যা করেছে। এটা ভারতের একটা মুসলিম নিধনের পলিটিক্যাল স্লোগান।
এ সময় তিনি ধর্মীয় আলেমদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা কেউ ইসকনের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। আপনারা যদি রাজপথে তাদের বিরুদ্ধে নামেন বা তাদের অপতৎপরতা রাজপথে প্রতিহত করতে চান, তাহলে তারা সেটির ফুটেজ ব্যবহার করে সংখ্যালঘু ভিক্টিম কার্ড প্লে করবে। বহির্বিশ্বে দেখাতে চাইবে তারা নির্যাতিত। আপনারা তাদের বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিহত করুন।
ইসকনের আর্থিক আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ইসকনের আয়ের উৎস প্রকাশ করতে হবে। ইসকন হয়তো বলতে পারে তারা নিজেরা অডিট করেছে, কিন্তু সেটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। যেমন গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে করা হয়েছিল। এছাড়া অনেক হিন্দুর মন্দির ও জায়গা জমিন দখল করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের আয়-ব্যয় ও সম্পদের যথাযথ হিসেব প্রকাশ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অতি দ্রুত স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে ইসকনের আর্থিক আয়ের উৎস প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় আমরা রিট আদায়ের করতে বাধ্য হবো এবং রাজপথে কঠোর কর্মসূচি পালন করবো।