টয়লেটে লুকিয়েও শেষরক্ষা হলো না আরুক মুন্সির” কাশিয়ানী উপজেলায় এক প্রত্যন্ত গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে মুজিব বলে পরিচয় দিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলছিলেন এক ব্যক্তি। স্থানীয়ভাবে তিনি “মুজিব” নামে পরিচিত ছিলেন, কিন্তু আসল নাম আরুক মুন্সি।
পুরো গ্রাম তাকে “নতুন মুজিব” হিসেবে সম্মান করলেও, তার চাঁদাবাজির খপ্পরে পড়ে অবশেষে গ্রামবাসী বুঝতে পারে এটি আসলে একটি বড় প্রতারণা। আরুক মুন্সি দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের লোকজনকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে আসছিলেন। কখনো তিনি বলতেন, “গ্রামে বিদ্যুৎ এনে দেব,” কখনো বা বলতেন, “স্কুল বানাবো, ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে।”
এর জন্য এককালীন “জাতীয় উন্নয়ন ফান্ড” দাবি করে তিনি প্রতিটি পরিবার থেকে চাঁদা তুলতেন। গ্রামবাসী তার কথা বিশ্বাস করে একের পর এক চাঁদা দিত, কিন্তু অদ্ভুতভাবে গ্রামের অবকাঠামোতে কোনো উন্নতি চোখে পড়ছিল না। বরং দেখা যাচ্ছিল, আরুক মুন্সির নিজস্ব জীবনযাত্রা ক্রমাগত বিলাসবহুল হয়ে উঠছে।
গ্রামবাসীর মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে, এবং অবশেষে এক সন্ধ্যায় তারা সিদ্ধান্ত নেয় আরুক মুন্সির কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার। খবর পেয়ে আরুক মুন্সি বুঝতে পারেন যে তার সময় শেষ হতে চলেছে। তিনি পালানোর চেষ্টায় দৌড়াতে দৌড়াতে বাড়ির টয়লেটে লুকিয়ে পড়েন। কিন্তু গ্রামবাসীও ততক্ষণে সাবধানী হয়ে উঠে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে।
অবশেষে, রাত ১০টার দিকে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময়ও আরুক মুন্সি চেঁচাতে চেঁচাতে বলছিলেন, “আমি মুজিব, আমাকেই গ্রামবাসী চেয়েছিল। সবই আমার উন্নয়নের টাকায় করা!” কিন্তু গ্রামবাসী জানে, তার কথায় আর কোনও সান্ত্বনা নেই।
গ্রেফতারের পর পুলিশ জানায়, আরুক মুন্সির আসল উদ্দেশ্য ছিল নিজেকে মহান ব্যক্তির মতো উপস্থাপন করে লোকজনকে প্রতারণা করা। ধরা পড়ার পরেও তিনি নিজেকে “মুজিব” পরিচয় দিয়ে গর্বের সুরে বলছিলেন, “আমি তো শুধু গ্রামবাসীর কল্যাণই চেয়েছি!” এ ঘটনার পর গ্রামবাসী তার ওপর প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হলেও, ঘটনাটি এখন এলাকায় হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে।