24 C
Dhaka
Monday, November 25, 2024

অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সিদ্ধান্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ নিয়ে সৃষ্টি হওয়া সংকট সমাধানে আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি করে আসছিলেন।

এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে, সরকারি সাত কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের নিয়ে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন আছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এ ব্যাপারে একটি টেকসই ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সাত কলেজ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানানো হয়। মূলত ‘অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই (ঢাবি) অধীনে থাকবে এবং এগুলো দেখভালের জন্য ঢাবির মধ্যেই পুরোপুরি আলাদা একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে’- এমন সিদ্ধান্ত এ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে এই বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ বিষয়ে গতকাল ৩১ অক্টোবর ২০২৪ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠককে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘সরকারি সাত কলেজ দেখভালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই পুরোপুরি আলাদা একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে আলাদা রেজিস্ট্রারসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন। তবে এ কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তই থাকবে।’

এতে আরও বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে উপদেষ্টা পরিষদের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত হয়েছে। এই প্রস্তাবের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ইতোপূর্বে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট মাননীয় উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন উচ্চমহলে আলাপ করেছে।

সরকারও বিষয়টির জনগুরুত্ব বিবেচনা করে আন্তরিকতার সঙ্গে সাড়া দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীসহ প্রধান অংশীজনদের নিয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে (সম্ভাব্য তারিখ আগামী রোববার) এ বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে সরকার সম্মত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সাত কলেজের প্রতিনিধিরা কথা বলেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটা জায়গার ঠিক করা হবে। যেখানে সাত কলেজের প্রশাসনিক কাজ করা হবে।

তাদের আলাদা রেজিস্ট্রার থাকবে। পুরো বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্টস কমিশনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য একটা আলাদা ফেসিলিটি হবে। তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট ভবনে আলাদা ফেসিলিটি হবে। তাদের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রি থাকবে। তাদের জন্য আলাদা অফিসিয়াল থাকবেন। তাদের জন্য যে সার্ভিসটা দরকার সেটা যেন ডেডিকেট ওয়েতে দিতে পারে।

এর আগে ২০১৭ সালে ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তার আগে কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। অধিভুক্ত সাতটি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে এই সাতটি কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, সাত কলেজ স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার যোগ্যতা রাখে৷ শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হলেও শিক্ষার মানের কোনো উন্নতি হয়নি, বরং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বেড়েছে৷

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ