হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানসহ নয়জনের। তবে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঠিক ঘটেছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত খুব একটা জানা যায়নি। এ ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নাকি এর পেছনে আছে কোনো ষড়যন্ত্র তা নিয়েও চলছে আলোচনা।
এই পরিস্থিতে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কি ঘটেছিল সে বিষয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ গোলাম হোসেইন ইসমাইলি। ঘটনার দিন বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটির পাশেই অপর একটি হেলিকপ্টারে ছিলেন তিনি।
ইসমাইলি জানান, রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধনের পর বেলা একটার দিকে তারা যাত্রা শুরু করেন। তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে তাদের গন্তব্য ছিল ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজ। তিনি বলেন, যাত্রা শুরুর সময় আবহাওয়া ছিল স্বাভাবিক। প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল মাঝখানে। আর সামনে একটি ও পেছনে অপর দুইটি হেলিকপ্টার ছিল। পুরো বহরের দায়িত্বভার ছিল প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির পাইলটের ওপর।
ইসমাইলি বলেন, যাত্রা শুরুর ৪৫ মিনিট পর রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলট অন্য দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটকে আরও উঁচুতে উঠে ভ্রমণ করার নির্দেশ দেন। মূলত তিনি কাছাকাছি থাকা ঘন মেঘ এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন। আর এটিই ছিল প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোস্তাফাভির শেষ কথা। পরে হঠাৎ রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি উধাও হয়ে যায়।
ওই কর্মকর্তা জানান, ঘন মেঘের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ড পর আমাদের পাইলট প্রথম খেয়াল করেন, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দেখা যাচ্ছে না। এরপর আমাদের পাইলট বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকেন। হেলিকপ্টারটি খুঁজতে থাকেন। তখন রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার রেডিও ডিভাইসে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি। পরে নিজেদের হেলিকপ্টার দুটির উচ্চতা কমিয়ে পাশের একটি তামার খনিতে অবতরণ করা হয়।
ইসমাইলি আরও বলেন, ওই সময় ‘অদৃশ্য হয়ে যাওয়া’ হেলিকপ্টারে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদোল্লাহিয়ান ও প্রেসিডেন্ট রাইসির নিরাপত্তা ইউনিটের প্রধানকে বারবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্য দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটরা প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোস্তাফাভিকেও কল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারও সাড়া পাওয়া যায়নি। জটিল ওই পরিস্থিতিতে শুধু রাইসির হেলিকপ্টারে থাকা মোহাম্মদ আলী আল-হাশেমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। তবে তার (আল-হাশেম) অবস্থা ভালো ছিল না। তিনি শুধু জানান, একটি উপত্যকায় তাদের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে।