23 C
Dhaka
Saturday, November 23, 2024

ফ্যান নষ্টের জেরে শিক্ষককে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা

চট্টগ্রামের চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজে শিক্ষককে মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে কলেজের অধ্যক্ষের রুমে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সাফাতুন নূর চৌধুরী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক বলে জানা গেছে। তিনি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কে এম আতিকুর রহমান সেমিনার কক্ষে ফরম পূরণের কাজ করছিলেন। তখন সেমিনার কক্ষে ঢুকে কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাফাতুন নুর চৌধুরী একটি নষ্ট পাখা দেখিয়ে তাকে ঠিক করে দেয়ার কথা বলেন। আতিকুর রহমান ফ্যানটি নতুন করে লাগানো হবে বলে জবাব দেন। বাকবিতণ্ডতার এক পর্যায়ে সাফাতুন নূর জানালার পর্দার পাইপ খুলে ফ্যানে আঘাত করলে অফিস সহায়ক প্রযুক্ত পালের মাথায় সজোরে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে অধ্যক্ষের কক্ষে নেন উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষকরা।

সাফাতুন নূর অধ্যক্ষের রুমে গিয়ে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গেও তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ওই ছাত্রলীগ নেতা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কে এম আতিকুর রহমানকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন এবং কিলঘুষি মারতে থাকেন। এতে ওই শিক্ষক আহত হন।

মারধরের শিকার সহযোগী অধ্যাপক কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমি সকালে সেমিনার কক্ষে বসে ছিলাম। সাফাতুন নূর আমাদের বিভাগেরই ছাত্র। সে এসে আমাকে ফ্যান কেন নষ্ট সেটা জিজ্ঞেস করে এবং সেটা মেরামত করার জন্য জানাই। তখন বিভাগীয় প্রধান স্যার সামনের মাসে টাকা তুলে ফ্যান ঠিক করাবে বলে তাকে জানাই। এরপরই সে ক্ষিপ্ত হয়ে পাইপ দিয়ে দেয়ালে আঘাত করে। এতে আমাদের এক অফিস সহায়ক গুরুতর আহত হন।’

‘পরে তাকে নিয়ে আমরা অধ্যক্ষের রুমে গেলে ওই ছাত্র আমাদের পেছন পেছন এসে আমাকে গালাগালি করতে থাকে এবং কয়েকটা ঘুষি মারে। প্রথম ঘুষিটি না লাগলেও দ্বিতীয় ঘুষিটি এসে আমার ঠোঁটে লাগে। এতে আমার ঠোঁট ফেটে যায়। কয়েকটি লাথিও মারে সে আমাকে। পরে তার সঙ্গে থাকা একজন ছাত্র তাকে টেনে নিয়ে চলে যায়। আমি থানায় গিয়ে এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করে এসেছি।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবদুল খালেক বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে অধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত আবেদন জানিয়েছি। আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এ ধরনের ঘটনার মেনে নেয়ার মতো নয়।’ তবে এ বিষয়ে জানতে কলেজ অধ্যক্ষ রনজিৎ কুমার দত্তের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল ধরেননি।

চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল ইসলাম জানান, কলেজের সেমিনার কক্ষে নষ্ট পাখা নিয়ে এক ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষকদের তর্ক বিতর্ক হয়। পরে ওই ছাত্র শিক্ষককে মারধর করেন। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাফাতুন নূর চৌধুরী বলেন, ‘আমি উনাকে কেন মারব। শিক্ষকরা আমাদের পিতৃতুল্য। আমি ওখানে গিয়েছিলাম সত্য। আমাদের কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণ চলছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসে আমাকে অভিযোগ দিয়েছে পটিয়া কলেজে ভর্তি ১ হাজার ৬৮০ টাকা আর আমাদের কলেজে নিচ্ছে ২ হাজার ৮৮০ টাকা। দুইটাই সরকারি কলেজ। এ বিষয়ে কথা বলতে আমি শিক্ষকদের রুমে গিয়েছিলাম। কেন টাকা বেশি নিচ্ছে এটার জন্য জবাব চেয়েছি শুধু। মারার তো প্রশ্নই আসে না। তাদের কাছে আমি কি কি খাতে ভর্তির টাকা নেয়া হচ্ছে সে ডকুমেন্ট চেয়েছি। সেটা তারা দিতে পারেনি। এজন্য আমার নামে তারা অপবাদ ছড়াচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ