গত মাসে ব্যাংকিং খাতে দেখা দেওয়া অস্থিরতা কাটিয়ে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকিং খাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় আমানত বীমা দ্বিগুণ করে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে।
রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘গত এক মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ফিরে এসেছে।’
গত মাসে অস্থিরতার মধ্যে অনেকে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা তুলে নিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এই পরিমাণ ছিল প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা।
গ্রাহকদের আস্থা আরও বৃদ্ধি এবং সঞ্চয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমানত বীমা ১ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে বলেও জানান গভর্নর।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের কোনো দেশই ১০০% আমানতকারীর অর্থের নিরাপত্তা দিতে পারে না, আমরাও পারি না। তবে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেলেও ছোট আমানতকারীরা তাদের টাকা অবিলম্বে ফেরত পাবেন। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
২০০০ সালের ব্যাংক আমানত বীমা আইন অনুসারে, প্রতি আমানতকারী সর্বাধিক ১ লাখ টাকা পর্যন্ত সুরক্ষিত ছিলেন। ফলে কোনো ব্যাংক ব্যর্থ হলেও প্রতি আমানতকারী সর্বাধিক ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত পেতেন।
গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং খাতে সংস্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই মুহূর্তে মূল লক্ষ্য হচ্ছে আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা।
এসময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নির্দেশে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়নি বলেও স্পষ্ট করে জানান তিনি।
এছাড়াও আগামী দশ দিনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতের সমস্যা চিহ্নিত এবং পূর্বের নীতিমালা পর্যালোচনা করতে একটি টাস্কফোর্স কাজ শুরু করবে বলেও জানান তিনি। এই টাস্কফোর্স ব্যাংকিং খাতে পরিবারকেন্দ্রিক প্রভাব কমাতে কাজ করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বিষয়ে তিনি বলেন, এসএমই খাতে ঋণ প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। দেশের এসএমই খাতকে শক্তিশালী করতে দ্রুত এই তহবিল ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হবে।
এস আলমের সম্পদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এস আলমের সম্পদ কেউ কিনতে চাইলে, নিজ দায়িত্বে কিনতে হবে। যারা ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছে এবং বেনামে ঋণ নিয়েছে তাদের দায় নির্ণয়ের চেষ্টা করছি। তাদের সম্পদ বিক্রি করে এই দায় মেটানো হবে। এখন যদি কেউ সেই সম্পদ কিনে, তাহলে সেটা তাদের দায়িত্ব।’