24 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতকে নেয়ার পরামর্শ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপি’র সম্পর্কে ছেদ পড়ে। একপর্যায়ে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভেঙে যায়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোর সরকার পতনে একদফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল না জামায়াত। কিন্তু বিএনপি’র সঙ্গে মিল রেখে প্রতিটি কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। ওই সময় কিছু জোট ও দলের কারণে জামায়াতকে যুগপৎ আন্দোলনে রাখা হয়নি। তবে গতকাল সমমনাদের সঙ্গে এক বৈঠকে জামায়াতকে আন্দোলনে নেয়ার পরামর্শ এসেছে। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও লেবার পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি’র লিয়াজোঁ কমিটি। বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠক হয়। এরপরে লেবার পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি’র লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা। বৈঠকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রে জানা গেছে, এসব বৈঠকে জোট নেতারা জামায়াতকে যুগপৎ আন্দোলনে নেয়ার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দেন। পাশাপাশি তারা বাম, ডানসহ সরকার বিরোধী সকল রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনগুলোকেও যুগপৎ আন্দোলনে নেয়ার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দেন।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রীয় সমস্যা এবং জনগণের বিভিন্ন সংকটের সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি। এরমধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিদ্যুৎ, পানি ও যোগাযোগ সংকটের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। একইভাবে আমাদের দেশে যে অর্থননৈতিক সংকট, টাকার অবমূল্যায়ন এবং ব্যাংকসহ বিভিন্ন অর্থনতৈিক প্রতিষ্ঠান লুট এবং রাষ্ট্রীয় ঋণের দ্রুত বৃদ্ধির প্রসঙ্গও বৈঠকে আলোচনায় এসেছে। তিনি বলেন, সীমান্তে মানুষ হত্যা এবং মিয়ানমার সীমান্তে যে নতুন ঘটনা ঘটেছে, এসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা একমত হয়েছি যে, জনগণকে সম্পৃক্ত করে আগামীদিনে আমরা কীভাবে অগ্রসর হতে পারি। আর আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করার চিন্তা করছি। আমাদের জোটগুলো তারা নিজেরা বসবেন এবং আলোচনা করবেন। এরপরে তারা আবারো আমাদের সঙ্গে বসবেন। আরো অন্যান্য জোট ও দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা আগামীদিনে আপনাদের (সাংবাদিক) কর্মসূচির বিষয়ে জানাবো। কিন্তু সমস্ত বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি যে, দেশে এবং দেশের মানুষ আজ আরও বেশি সংকট ও সমস্যার মুখোমুখি। তারা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।

বৈঠকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতৃবৃন্দের মধ্যে এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ক্বারী মো. আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এমএন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এরপরে বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি লিয়াজোঁ কমিটি। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেন। এরমধ্যে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইউসুফ আলী, এডভোকেট আমিনুল ইসলাম রাজু, হিন্দুরাত্মা রামকৃষ্ণ সাহা, এডভোকেট জহুরা খাতুন জুঁই, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি তরিকুল ইসলাম সাদী, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মনির হোসেন খান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. জনি আহমেদ এবং মো. মাসুম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের মুক্তি ও অধিকার আদায়ের আন্দোলনে মাঠে-ময়দানে সক্রিয়। জনগণও এখন দেশের ভবিষ্যৎ প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়েই ভাবে। এমতাবস্থায় বিএনপির দল রক্ষার আন্দোলনে যোগদেয়ার পূর্বে জামায়াতে ইসলামীকে চিন্তা করতে হবে।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ