27 C
Dhaka
Monday, April 21, 2025

সাবেক এমপি শিবলী সাদিকসহ ১২৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া দুই কিশোরকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগে দিনাজপুরের হাকিমপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

হত্যা মামলায় দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ও পৌর মেয়র জামিল হোসেনসহ ১২৩ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ ও ৯০-১০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে নিহত যুবক আসাদুজ্জামান নূরের বড় ভাই মো. সুজন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। হাকিমপুর থানার ওসি দুলাল হোসেন বিষয়টি তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন, হাকিমপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সভাপতি হারুন উর রশিদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনুর রেজা, খট্টা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাওসার রহমান, বোয়ালদাড় ইউপি চেয়ারম্যান সদরুল ইসলাম, আলীহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান, উপজেলা

আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুর আলম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হক। তারাসহ আ.লীগের আরও ১১ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট বেলা আড়াইটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে হাকিমপুর পৌর শহরে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের নির্দেশে হাকিমপুর উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন আ.লীগের নেতা-কর্মীরা হিলি রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের নিচে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

করেন। এ সময় আ.লীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনে অংশ নেওয়া আসাদুজ্জামান নুর, নাঈম হোসেন, নাফিজ, মোস্তাকিম মেহেদী, মহিদুল ও বাবু আহম্মেদকে মারধর করতে করতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। পরে আসাদুজ্জামান ন‚র ও নাঈম হোসেনকে পৌর মেয়র জামিল হোসেনের বাড়িতে টর্চার সেলে নিয়ে যান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

সেখানে তাঁদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ফলে সেখানে স‚র্য ও নাঈমের মৃত্যু হয়। পরে আসামিরা এ দুজনের লাশ গুম করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে গভীর রাতে নাফিজ, মোস্তাকিম মেহেদী, মহিদুল ও বাবু আহম্মেদ কৌশলে পৌর মেয়রের বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

পরে ওই তরুণরা বিষয়টি আসাদুজ্জামানের পরিবারকে জানান। তখন তার বড় ভাই মো. সুজনসহ স্থানীয় লোকজন পৌর মেয়রের বাড়িতে গিয়ে আসাদুজ্জামান ও নাঈমের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। সেখানে থাকা বাড়ির লোকজন ও আ.লীগের নেতা-কর্মীরা নিহত দুজনের অবস্থান বলেননি এবং তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি।

পরদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিহত এ দুজনের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে আ.লীগের নেতাকর্মীরা বাড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

পরে রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌর মেয়র জামিল হোসেনের বাড়ি থেকে আসাদুজ্জামান ও নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করে।

হাকিমপুর থানার ওসি দুলাল হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায় গতকাল সকালে থানায় এসে মামলাটি করেছিলেন নিহত আসাদুজ্জামানের বড় ভাই।

থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফুর রহমানকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ