24 C
Dhaka
Monday, November 25, 2024

আন্দোলনে নিখোঁজ: ২৪ দিন পর রায়েরবাজার কবরস্থানে মিলল শিক্ষকের মরদেহ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিখোঁজের ২৪ দিন পর পিরোজপুরের নাজিরপুরের রফিকুল ইসলাম (৫২) নামের এক শিক্ষকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাতকাছিমা গ্রামের মৃত জব্বার শিকদারের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কম্পিউটার শিক্ষক ছিলেন।

জানা যায়, শিক্ষক রফিকুল ইসলামের রাজধানী ঢাকার গোপীবাগে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। গত ১৯ জুলাই রাত সোয়া ৯টা থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ হলে তিনি নিখোঁজ হন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১৯ জুলাই অফিস থেকে বেরিয়ে মানিকনগর বিশ্বরোডে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে কর্মসূচি শেষ করে মসজিদে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

এরপর আর ফিরে আসেননি তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে তার স্ত্রী ও সন্তান জানতে পারে তিনি কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি।

এর মধ্যে হঠাৎ গত শুক্রবার (৯ আগস্ট) কে বা কারা তার স্ত্রীকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু গতকাল শনিবার (১০ আগস্ট) রফিকুল ইসলামের ভাইয়েরা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে গেলে ছবি দেখে রফিকুল ইসলামের লাশ শনাক্ত করেন।

জানা যায়, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম গত ২৪ জুলাই বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে রায়েরবাজারে অসংখ্য লাশের সাথে রফিকুল ইসলামকে দাফন করেছে।

স্বজনরা আরও বলছে, লাশ শনাক্ত করে দেখা যায় ঘাতকরা রফিকুল ইসলামকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করেছে। যা নাৎসি বাহিনীকেও হার মানিয়েছে।

নিহতের স্ত্রী নাফিয়া ইসলাম জানান, গত ১০ আগস্ট বিকালে ঢাকার মোহাম্মাদপুরের রায়েরবাজার আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম কবরস্থানে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এর আগে একই দিন দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে থাকা তার গুলিবিদ্ধ ছবি থেকে তাকে শনাক্ত করা হয়।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের পক্ষে কয়েকটি মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন আমার স্বামী রফিকুল ইসলাম । সে কারণে প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছিলাম, তিনি হয়ত পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাগারে আছেন। এ কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন থানা ও ডিবি পুলিশের কাছে খোঁজ নেওয়া হয়েছিল। এখন তার লাশ পেলাম।

নিহতের বাড়ির পাশের উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান রিপন বলেন, অত্যন্ত নিরীহ ও ভদ্র ছিলেন রফিকুল ইসলাম। তার মৃ্ত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন এমন হত্যা ও গুমের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের শাসন আমলে দেশের হাজার হাজার শিক্ষক ও ভিন্ন মতাদর্শের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে লাশ গুম করেছে। তাদের এমন হত্যার বিচার করতে হবে।

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এক স্ত্রী এক ছেলে রেখে গিয়েছেন, ছেলে বর্তমানে তা’মিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ