ঝিনাইদিহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতে ছিলেন জিহাদ হাওয়ালাদার ওরফে ‘কসাই’ জিহাদ। আজ বুধবার (৫ মে) তাকে আদালতে তোলা হতে পারে।
এর আগে, গত ২৪ মে জিহাদকে বারাসাত আদালতে তোলে সিআইডি। সেদিন তাকে ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতে দেন আদালত। এসময়, কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিলো অভিযুক্তের চেহারা। সাংবাদিকরা চাঞ্চল্যকর খুনের বিষয়ে প্রশ্ন করলেও কোনো জবাব মেলেনি। কর্মকর্তারা জানান, কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করে জিহাদ। ‘কিলিং মিশনে’ও জড়িত ছিল সে। তার বিরুদ্ধে, অপহরণ-হত্যাচেষ্টার মতো মোট ৪টি ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
সিআইডি জানায়, গ্রেফতারকৃত জিহাদের বয়স ২৪ বছর। তিনি মুম্বাইয়ের অবৈধ অভিবাসী ছিলেন। বাড়ি খুলনার দীঘলিয়ায়। তার দেখানো এলাকাতেই মরদেহের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। পরে তার খোঁজ পাওয়া না গেলে গত ১৮ মে ভারতে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন এমপি আনারের পরিচিত ও ভারতের বরানগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস। এরপর এমপি আনারের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে বলে গত ২২ মে জানায় ভারতীয় পুলিশ। তারপর থেকে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ওইদিন রাতেই ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। এই মামলার আসামিরা হলেন— শিমুল ভূইয়া, সিলিস্তি রহমান, তানভীর ভূইয়া, আক্তারুজ্জামান শাহীন, মো. সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলী সাজী, চেলসি চেরী, তাজ মোহাম্মদ খান ও মো. জামাল হোসেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহের কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো।
এরপর, গত ২৮ মে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা আবাসনের বিইউ-৫৬ ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে কিছু মাংস উদ্ধার করে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। ধারণা করা হচ্ছে, তা এমপি আনারের মরদেহের খণ্ডিত দেহাংশের মাংস।