চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করেছেন মুকিব মিয়া নামের এক বিসিএস কর্মকর্তা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করা তাঁর অধিকার।
মুকিব মিয়া তিনি ৩১ তম ব্যাচের বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার। এ ছাড়া তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসিমউদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লিফলেট বিতরণ করেন তিনি। লিফলেট বিতরণের সেই ছবি ও এ সংক্রান্ত তথ্য তাঁর ফেসবুক ওয়ালেও দেখা গেছে।
মুকিব মিয়ার ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরে দেখা যায়, তিনি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সমর্থক। আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণের নানা জায়গার ছবি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন মুকিব। এ ছাড়া প্রতিনিয়তই তিনি আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচির ছবি পোস্ট করেন।
সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না, অংশ নিতে নেওয়া যাবে না- সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫ (১) ধারায় এমন কথা বলা থাকলেও তার কোনো তোয়াক্কা করেননি তিনি।
মুকিব মিয়ার ভাষ্য, লিফলেট বিতরণ করে তিনি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেননি। উল্টো ড. ইউনূস সংবিধান লঙ্ঘন করছেন বলে দাবি করেন তিনি। ফলে এসব কারণে তিনি প্রতিবাদ করেছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগও প্রতিবাদ করছে। তাই আওয়ামী লীগের লিফলেট আমার নেতৃত্বে বিতরণ করেছি। এতে চাকরিবিধি লঙ্ঘন হয়নি। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছে, এ দলের লিফলেট বিতরণ করা আমার অধিকার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গত তিন মাসে একবারও কলেজে আসেননি মুকিব মিয়া। যোগদানের জন্য তিনি অনলাইনে আবেদন করেন। তার আবেদন গ্রহণ করা হয়। তবে তিনি তার যোগদানের হার্ডকপি জমা দেননি। সম্প্রতি তিনি ৩ মাসের অসুস্থতাজনিত ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু সঙ্গে চিকিৎসকের সুপারিশ, ব্যবস্থাপত্র, অসুস্থতার প্রমাণপত্র কিছুই দেননি। এরপর থেকে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই।
জানা গেছে, মুকিবের লেখাকে ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ৩(খ) ধারা অনুযায়ী আচরণ লঙ্ঘন উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে গত ২০ জানুয়ারি বিভাগীয় মামলা করা হয়। এ ছাড়া কেন তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না, তা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে নোটিশও দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে ইচ্ছুক কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়।