28 C
Dhaka
Saturday, November 23, 2024

‘তর ছেরারে মাইরালবাম, রান কাইট্যা টুকরা করবাম; সময় গনতে থাক’

‘তুই আমার ছেড়িরে (মেয়েকে) জোর কইর‌্যা নিয়া বিয়া করাইছস। তর ছেড়ারে (ছেলেকে) মাইরালবাম, রান কাইট্যা টুকরা টুকরা করবাম। অহন থাইক্যা সময় গনতে থাক’ -এভাবেই মোবাইল ফোনে ছোট ভাই বড় ভাইকে হুমকি দিয়েছিলেন। এর ১০ দিন পর গত রোববার বড় ভাইয়ের ছেলে সৌরভের চার টুকরা লাশ পাওয়া গেছে লাগেজের ভেতর। ময়মনসিংহের সুতিয়া নদী থেকে চার টুকরা লাশসহ লাগেজ উদ্ধার করা হয়েছে।

সদর ও মুক্তাগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী মনতলা সেতুর নিচে নদীতে লাগেজটি পড়ে ছিল। লাশের মাথা ছিল পলিথিনে মোড়ানো। দুই পা ও শরীর ছিল আলাদা। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকেলে সৌরভের লাশ আনা হয় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি গ্রামের বাড়িতে। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকা।

জানা যায়, নিহত ওমর ফারুক সৌরভ ওই গ্রামের ইউসুফ আলী আকন্দের ছেলে। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন তিনি। তার বাবা জিপিওতে চাকরি করেন, পরিবার নিয়ে বসবাস করেন ঢাকার মতিঝিল স্টাফ কোয়ার্টারে।

সৌরভের চাচাতো বোন ইভাও ঢাকায় অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতেন। ঢাকায়ই দুজনের প্রেম হয়। গত ১২ মে সৌরভ আর ইভা বিয়ে করেন। ইভার পরিবার এই বিয়ে মেনে নিতে পারছিল না। তাই দুই পরিবারে সৃষ্টি হয় বিরোধ।

ইভার বাবা ইলিয়াছ আকন্দ বিয়ের পর থেকে বড় ভাই ইউসুফকে ফোন করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। সৌরভকে টুকরা টুকরা করা হবে বলে সময় গুনতে বলেন। কয়েক দিন পরেই পাওয়া গেল সৌরভের লাশ।
গতকাল সোমবার গ্রামের বাড়িতে লাশ নিয়ে আসার পর সৌরভের মা পারুল আক্তার জানান, গত ১২ মে সৌরভ ও ইভা ভালোবেসেই বিয়ে করে।

চার দিন পর ১৬ মে ইভাকে কৌশলে তার বাবা কানাডায় পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় সৌরভ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। কিন্তু ইভার বাবা ইলিয়াছ মোবাইল ফোনে অনবরত সৌরভের বাবাকে হুমকি দিতে থাকে। এ সময় মোবাইল ফোনে রেকর্ড থাকা হত্যার হুমকির অডিও বের করে শোনান তিনি।

পারুল বলেন, ‘আমার ছেলেরে কে হত্যা করেছে এখন সবই পরিষ্কার। আমি বিচার চাই।’ এ সময় একই দাবি করেন সৌরভের তিন ফুফু বেগম আক্তার, সাবিনা আক্তার ও খাদিজা আক্তার।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ