মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য কোটায় চাকরি নেওয়ার সময় দাখিল করা মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় চাকরি করা ব্যাংক কর্মচারীর বেতনের ২৮ লাখ টাকা ফেরত দাবি করেছে সোনালী ব্যাংক। কর্মচারীর নাম সোহাগ সমদ্দার।
তিনি সোনালী ব্যাংকের পাথরঘাটা শাখায় ক্যাশ অফিসার পদে ২০১৫ সালের ৫ জুলাই যোগদান করেন। তিনি তাঁর পিতার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে সোনালী ব্যাংকে ক্যাশ অফিসার পদে চাকরি নিয়ে সাড়ে তিন বছর চাকরি করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য ব্যাংক কর্মচারী সোহাগ সমদ্দারের পিতা নিত্যানন্দ সমদ্দার। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানী গ্রামে।
জানা যায়, সোহাগ সমদ্দার তার বাবা নিত্যানন্দ সমদ্দারের নামে যে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দাখিল করেছিলেন তা ভুয়া। সার্টিফিকেটেটি ভুয়া প্রমাণিত হলে ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ততদিনে সোনালী ব্যাংকে সোহাগ সমাদ্দারের চাকরির বয়স পেরিয়ে যায় সাড়ে ৩ বছর। এই সময় তিনি বেতন বাবদ তুলে নেন প্রায় ২৮ লাখ টাকা। এই টাকা ফেরত পেতে মামলা করেছে ব্যাংক।
সোনালী ব্যাংক পাথরঘাটা শাখার ব্যবস্থাপক মো. আবদুল জলিল জানান, সোনালী ব্যাংকের চাকরির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিধিমোতাবেক আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অফিসার (ক্যাশ) পদে নির্বাচিত হয়ে সোহাগ সমদ্দার ২০১৫ সালের ৫ জুলাই পাথরঘাটা শাখায় যোগদান করেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, তাঁর পিতার দাখিল করা মুক্তিযোদ্ধার সনদ ভুয়া। দাখিল করা একটি সাময়িক সনদে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষর রয়েছে।
২০০৬ সালের ১ জুন সনদ ইস্যু করা হয়েছে (যার স্মারক মু ব ম/সা/বরগুনা/প্র-৩/৪৭/২০০২/২১২৭, তাং ০১.০৬.২০০৬)। এর আগে সোনালী ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গত ১১.০৫.২০২২ তারিখ তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে ।
পাথরঘাটা সার্টিফিকেট অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ সেপ্টেম্বর সরকারি অর্থ আদায়ের জন্য ১৯১৩ সালের সরকারি পাওনা আদায়ের আইন মোতাবেক মামলা রুজু হলে সোহাগ সমদ্দারকে ২৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৯ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সার্টিফিকেট অফিসার মো. রোকনুজ্জামান জানান, সরকারি পাওনা পুনরুদ্ধার করতে প্রয়োজনে মালক্রোক বা সম্পত্তি নিলামে বিক্রী করে আদায় করা হবে।