24 C
Dhaka
Sunday, January 26, 2025

সরকারকে বলেছি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, ১৮ কোটি মানুষ সঙ্গে আছে

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেলেও দেশে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দখল বন্ধ হয়নি। এটা আগে এক দলের কাছে ছিল, এখন আরেক দলের হাতে গেছে। আমি সরকারকে বলেছি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে।

শনিবার কুষ্টিয়া জেলা জায়ামাত আয়োজিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে বিশাল এ কর্মী সভা শুরু হয় সকাল সাড়ে ৯টায়।

এ সময় জামায়াত আমির বলেন, ৫ আগস্ট অসংখ্য মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কেউ দুই চোখ হারিয়েছে, কেউ এক পা, এক হাত হারিয়েছে। অনেকে পঙ্গু হয়ে হাসপাতালের বিছানায়।

তাই আমরা এদেশ গড়তে চাই। রাষ্ট্র সবার সমান অধিকার দিয়েছে। আল্লাহর কুরআনও সকলকে সমান অধিকার দিয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে বিভাজন করা হবে না। সবাই নিরাপত্তার সাথে তার নিজের ধর্ম পালন করবে। এটা মদিনা সনদে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো মেজরিটি-মাইনোরিটি নেই।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত প্রায় ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে দেশকে শোষণ করেছিল। তারা দেশপ্রেমের কথা বলে লুটপাট চালিয়েছিল। তাদের চুরি ও লুটপাটের কথা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। পিয়নের যদি ৪০০ কোটি টাকায় হয় তাহলে মালিকের কত?

এই কুষ্টিয়ার পাশেই রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র। এই একটা প্রকল্প থেকে তারা ৫৭ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছে। যা বাংলাদেশের চারটি বাজেটের সমান। তার বোন শেখ রেহানা, ভাগিনা বৃটিশ এমপি টিউলপসহ অন্যরা ভাগাভাগি করেছে। দুর্নীতির দায়ে টিউলিপের বিরুদ্ধে লন্ডনেও সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার, তবে তাদের কোনো লজ্জা নেই। কথায় আছে চোরের মায়ের বড় গলা।

প্রায় আধা ঘণ্টার বক্তব্যে জামায়াত আমির আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে তার একটি রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ জামায়াতকে ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসার সুযোগ দিলে সব ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা, ইজ্জতের হেফাজত করবে। জামায়াতকে নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়। জামায়াত নাকি ক্ষমতায় গেলে নারীদের নিরাপত্তা থাকবে না। মহিলারারা মায়ের জাতি।

আমরা নারীদের মায়ের মতো সম্মান করি। তাদের সব স্বাধীনতা থাকবে। অন্য ধর্ম ও কাউকে জোর করে পর্দা করানো ও চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার ইসলাম আমাকে দায়িত্ব দেয়নি। তার প্রমাণ আমার স্ত্রী ডাক্তার, রাজনীতিবিদ। আমার দুই মেয়ে ডাক্তার ও ছেলে ডাক্তার। অনেকে বলেন, আমরা নারীদের কালো বোরকায় আবদ্ধ করবো। বোরকা কালো হবে, না সাদা হবে, না বেগুনি হবে- তা চয়েজ করা আমাদের কাজ নয়। তবে আমার কথা অনেক সাংবাদিক উল্টা-পাল্টা কোট করেন। সেটা কেউ কেউ।

জেলা জামায়াত আমির প্রফেসর আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলামসহ বিভাগীয় ও স্থানীয় জামায়াত এবং শিবির নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এদিকে দীর্ঘ ১৮ বছর পর প্রকাশ্যে জামায়াত কর্মী সভাকে ঘিরে সকাল থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার কর্মী মিছিল নিয়ে সরকারি কলেজে মাঠে হাজির হন। তারা নানা রকম স্লোগান দেন। দীর্ঘদিন পর এ ধরনের সভায় আসতে পেরে তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সরকারি কলেজ মাঠ কানায়-কানায় ভরে যায়।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ