28 C
Dhaka
Thursday, November 28, 2024

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ নিয়ে যে তথ্য দিলেন আবহাওয়াবিদ পলাশ

আগামী সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেল। বলা হচ্ছে, আগামী ২৪ থেকে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, অক্টোবর মাসের ২১ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশংকা নির্দেশ করেছে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বেশিভাগ আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল।

এখানে উল্লেখ্য যে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল একই সঙ্গে সমুদ্রের কোন স্থানে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিলে সেই ঘুর্ণিঝড়টি সৃষ্টি সম্পর্কে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া যায়। সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ডানা।

এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার এর দেওয়া। আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় ডানা অক্টোবর মাসের ২৪ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে উপকূলে আঘাত করতে পারে।

পলাশ বলেন, ১৭ অক্টোবর তারিখে একই সঙ্গে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা ৭০ থেকে ৮০ আশঙ্কা নির্দেশ করেছে ১৬ অক্টোবর তারিখে প্রদত্ত পূর্বাভাস অনুসারে।

আজ ১৭ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি হওয়া নিয়ে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেলেও কোনো স্থানের উপকূলে আঘাত করবে সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কোনো পূর্বাভাস করা যাচ্ছে না। ঘূর্ণিঝড় ডানা কোন উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করবে তা জানার জন্য কমপক্ষে আগামী ২০ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল একই সঙ্গে নির্দেশ করেছে যে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগ ও ভারতের ওড়িশা রাজ্যের মধ্যবর্তী যেকোনো উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ড. ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বৈঠকের তারিখ ঘোষণা
এখানে উল্লেখ্য যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় বর্ষা মৌসুম শুরু পূর্বে ও বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ার পরে।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে বর্ষাকালের মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি বাংলাদেশের স্থলভাগ ত্যাগ করেছে ১৪ অক্টোবর। অর্থাৎ, বাংলাদেশের উপরে ২০২৪ সালের বর্ষা মৌসুম অফিসিয়ালি শেষ হয়ে গেছে ১৪ অক্টোবর।

পলাশ জানান, বর্ষাকাল যেহেতু সবেমাত্র শেষ হলও তাই আজ ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপও সৃষ্টি হয় নাই; তাই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে। আজ ১৭ অক্টোবর পূর্ণিমা রাত।

ঘূর্ণিঝড়টির উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে ২৪ কিংবা ২৫ অক্টোবর। ২৪ অক্টোবর চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে ৯০ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্ব থাকবে যার কারণে জোয়ার-ভাটার উচ্চতা সর্বনিম্ন পরিমাণে থাকবে। ফলে এই সময়ে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত করলে জলোচ্ছ্বাসের উপরে সামুদ্রিক জোয়ার প্রভাব অপেক্ষাকৃত কম থাকবে।

আরও পড়ুনঃ ব্যারিস্টার সুমন এখন কোথায়?
যেহেতু অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখের পরে সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে তাই সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি নিম্ন কিংবা মধ্যম মানের শক্তিশালী হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

তবে ঘূর্ণিঝড় ডানা যদি ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলের দিকে পৌঁছায় ও ওই সময় ওই স্থানের উপরে বায়ু শিয়ারের মান অনুকূল অবস্থায় থাকে তবে ঘূর্ণিঝড়টি অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী হওয়ার আশঙ্কা থাকবে যেহেতু ওড়িশা উপকূলে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময় অপেক্ষা প্রায় ২ থেকে আড়াই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ