শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশত্যাগী বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে থাকা উচিত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট ম্যাগাজিনকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে লঙ্কান প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়। ম্যাগাজিনটির সম্পাদক পালকি শর্মার সঙ্গে ওই আলাপকালে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন।
ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের দাবির বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইলে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘অনেক নেতা দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যান। তারা সেখানে বসবাস করেন। শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থাকলে—তাকে দেশের বাইরে থাকতে দিন। আমরা সবাই চাই, বাংলাদেশ স্বাভাবিক হওয়ার দিকে মনোনিবেশ করুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনতে হবে। জনগণের আস্থা ফেরাতে হবে। শেখ হাসিনার বিষয়টি উদ্বেগের। তবে এটি রাজনৈতিক ইস্যু। রাজনৈতিকভাবে এর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনেক নেতা দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যান। এরপর তারা বিদেশে থাকেন। বাংলাদেশ স্থিতিশীল রাখা নিশ্চিতের ওপর আমি অগ্রাধিকার দেব।’
বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা দ্রুত আসতে হবে। সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হতে পারে। আমরা সবাই চাই, বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থার দিকে মনোনিবেশ করুক। কীভাবে দেশ পরিচালিত হবে তা সিদ্ধান্ত নিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করা হোক।’
আরও পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্র, যা লেখা আছে
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এখন পর্যন্ত তিনি ভারতেই আছেন। বাংলাদেশে তার নামে ছাত্র-জনতা হত্যার অভিযোগে একের পর এক মামলা হচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিতের স্বার্থে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি উঠেছে।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দেন। এ সাক্ষাৎকারে গত সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া নৃশংসতার ন্যায়বিচারে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে কূটনৈতিক পাসপোর্টে দেশ ছাড়ায় তিনি ভারতে বৈধভাবে ৪৫ দিন অবস্থান করছেন বলে খবর বেরোয়। তার এ ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। ফলে তার ভাগ্যে আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, কূটনৈতিক পাসপোর্টে শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হলেও তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।