অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে সহায়তা করতে গঠিত লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক মাহফুজ আবদুল্লাহ বলেছেন, রয়টার্সে দেওয়া তার বক্তব্য ভুলভাবে এসেছে। রাজনৈতিক দল খোলার কথা বলা হয়নি! শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সে নতুন রাজনৈতিক দল খোলার খবর প্রকাশ
হওয়ার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক নিজস্ব প্রোফাইলে এক পোস্টে এসব কথা বলেন। নতুন রাজনৈতিক দল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামও।
রয়টার্সে দেওয়া তার বক্তব্য ভুলভাবে এসেছে। আর সে ভুল বক্তব্যের বাজে বা উদ্দেশ্যমূলক অনুবাদ বাংলাদেশি মিডিয়া প্রচার করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
মাহফুজ আবদুল্লাহ লেখেন, ‘রয়টার্সে আমার বক্তব্য ছিল, আমরা রাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে এখনই ভাবছি না। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য আমরা কাজ করছি। গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রাখা এবং সরকারকে সংহত করা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য।
রাষ্ট্র ও সমাজের নানা অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে আমরা আগামী বাংলাদেশের রূপরেখা নিয়ে ও কাজ করবো। এ কাজে অন্তত এক মাস লাগবে। আর রয়টার্সও লিখেছে এক মাস পর নির্ধারিত হবে আমরা দল করব কী করবো না!
তবে রয়টার্স একটি ভুল করেছে, নাগরিকদের বদলে তারা ভোটার শব্দটি ব্যবহার করেছে। অথচ নির্বাচনি রাজনীতি নিয়ে আমাদের খুব কমই কথা হয়েছে। কৃষ্ণ কৌশিককে আমি লিখেছি, উনি হয়তো এটা এডিট করে দেবেন।’
রয়টার্সের সাংবাদিক বারবার দ্বিদলীয় কাঠামো নিয়ে এবং তা উতরে যেতে রাজনৈতিক দল করবো কি না, এ বিষয়ে প্রশ্ন করেলে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, আমরা দল বা ব্যক্তি নয়, ব্যবস্থার সংস্কার চাচ্ছি। যাতে যে দলই আসুক, তাকে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হয়।
কিন্তু এমনভাবে বলা হলো যেন আমি মাইনাস টু চাচ্ছি। যেটা আমার উদ্দেশ্য না অবশ্যই। আমাদের এখনকার লক্ষ্য, রাজনৈতিক লড়াইকে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে গঠনমূলক কাজের দিকে চালিত করা। উপযুক্ত সময়ে রাজনৈতিক গঠন/গড়ন কেমন হবে, তা সবাই জানতে পারবেন।’
রাজনৈতিক দলের পরিকল্পনা নেই: এদিকে নাহিদ ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক দল গঠন আমাদের গণঅভ্যুত্থানের অভিমুখ না। এই মুহূর্তে প্রয়োজন অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, নতুন করে দেশ গঠন-সংস্কার ও অভ্যুত্থানের স্পিরিট ও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা। ছাত্র-জনতা ও অর্ন্তর্বতীকালীন সরকার সেই
লক্ষ্যে কাজ করবে।’ তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমাদের এক দফার অংশ ছিল। সেজন্য বিস্তর কাজ ও রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রয়োজন।’ ‘জনগণের সঙ্গে আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা প্রণয়ন করতে চাই’, বলেন নাহিদ ইসলাম।
রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষায় সামাজিক-রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে।’
সরকার এবং শিক্ষক ও কর্মীদের মতো সামাজিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি কমিটির সদস্য মাহফুজ আলম রয়টার্সকে বলেছেন, ছাত্র নেতারা দ্বৈত প্রথার অবসান ঘটাতে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে আলোচনা করছেন।
আন্দোলনকারী নেতারা একটি প্ল্যাটফর্মে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরামর্শ করতে চাইছেন। এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। দুই রাজনৈতিক দলকে (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) নিয়ে মানুষ সত্যিই ক্লান্ত। আমাদের ওপর মানুষের আস্থা আছে।