রাজধানীর উত্তরায় একটি স্থানীয় সংবাদপত্রের অফিসে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুবদলের সাবেক নেতা এস এম জাহাঙ্গীরের ‘হুকুমে’ তার অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন সংবাদপত্রের সহকারী সম্পাদক মো. মাসুম কাজী। একই সঙ্গে উত্তরা-পশ্চিম থানায়ও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত পত্রিকা দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ পত্রিকা। উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের ৩/এফ রোডের ৪৯-৫১ নম্বর বাড়ির উত্তর পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় টিনশেড ঘরে পত্রিকাটির অফিস।
গত ১ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যুবদলের সাবেক নেতা ও উত্তর বিএনপির নেতা এস এম জাহাঙ্গীরের হুকুমে তার ক্যাডার বাহিনী সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে পত্রিকা অফিসে হামলা চালানো হয়। সেসময় সেখানে অবস্থান করা সাংবাদিক এস এম নুর, সোহেল, জয় এবং সবুজকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অফিসের সব আসবাবপত্র (৩টি কম্পিউটার, একটি ল্যাপটপ, সিসিটিভি মনিটর, সিলিং ফ্যানসহ টেবিল-চেয়ার) লুট করে নিয়ে যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন / শামীম ওসমানের গুলিতে মৃত্যুর অভিযোগ, আসামি আইভীসহ ৪৩০
এতে আরও বলা হয়, তাছাড়া ২০১৩-২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত পত্রিকার সব অফিস কপি, গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র, সংবাদের প্রমাণপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
তারা অফিসে তালা লাগিয়ে সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বের করে দেয়। এতে আনুমানিক ৭-৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা উত্তরা-পশ্চিম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। সেনাবাহিনীর ক্যাম্পেও জানিয়েছি। তারপরও সন্ত্রাসীরা এমন ভয়ঙ্কর যে আমরা অফিসে যেতে পারছি না।
লিখিত অভিযোগে অফিস খুলে দেয়া এবং লুট মালামাল ফেরতের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
এদিকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তরায় চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। বিএনপি নেতা এস এম জাহাঙ্গীরের ছত্র-ছায়ায় থাকা যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা এসব অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন বলেও একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংবাদপত্র অফিসে হামলা-লুট এবং উত্তরায় চাঁদাবাজির ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার রওনক জাহান বলেন, রাস্তা আটকে কোনো দোকানপাট বসলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তাছাড়া পরিবহনের চাঁদাবাজির বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির বর্তমান নেতা ও সাবেক যুবদল নেতা এস এম জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে বলেন, সংবাদপত্র অফিসটি এক সময় বিএনপির অফিস ছিল।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা দখল করে আওয়ামী লীগের অফিস করা হয়। গত পরশু সেখানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তাতে আমাকে জড়ানো হয়েছে বলেও জেনেছি। পরে যুবদল নেতা মিলন ও পত্রিকার লোকদের ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে।’