এক ড্রাইভে নিয়ে গিয়ে গাড়ির মধ্যে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয় ওপার বাংলার অভিনেত্রী এনা সাহাকে। রাজি না হওয়ায় অভিনেত্রীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় রাজারহাটের ফাঁকা রাস্তায়! সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অভিনেত্রী।
যৌন হেনস্থা প্রসঙ্গে এনা বললেন, ভালো কাজ পেতে হলে কম্প্রোমাইজ করতে হবে, এরকম বহু সময় বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সেটা একটা সময়ের পর আর মানিয়ে নিতে পারিনি। যে কারণে ২০১৮ সালে নিজের প্রযোজনা সংস্থা তৈরির কথা ভাবি।
বয়স আঠারো হওয়ার আগেই নায়িকা হন এনা সাহা। নায়িকা হওয়ার পরও পেয়েছেন এসব প্রস্তাব। বললেন, ১৭ বছর বয়সে সিনেমার নায়িকা হয়েছি। তার পরেই এক প্রযোজক আমাকে ড্রাইভে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। টলিউডে আমি খুব কম বয়স থেকে কাজ শুরু করেছি।
তাই অনেক সময়েই কারও গাড়িতে উঠেছি। অন্যরকম কিছু হতে পারে ভাবিনি। সেদিনও ড্রাইভে যাওয়ার প্রস্তাব পেয়ে না করিনি। কিন্তু তারপর গাড়ির মধ্যে প্রযোজক এমন কিছু করার প্রস্তাব দেন, যাতে আমি ‘না’ বলতে বাধ্য হই। তিনি জোর দিয়ে বলেন। আমি শুনিনি। সেই ‘না’ শুনে তিনি রেগে যান। আমাকে গাড়ি থেকে রাজারহাটে একটা ফাঁকা রাস্তায় নামিয়ে দেন।
তিনি আরও বললেন, শুধু সেদিন নয়, আরও বহুদিন এমন হয়েছে, যখন খারাপ লেগেছে। শুরুর দিকে খুব ভয় পেতাম। কারও প্রস্তাবে ‘না’ বলে দিলে আর কাজ পাব না, সেই ভয়টা ঘিরে ধরত। আজকে এত বছর পর নিজের প্রযোজনা সংস্থা হয়েছে বলেই হয়তো মন খুলে কথা বলছি।
প্রতিবাদের প্রসঙ্গ টেনে এই অভিনেত্রী বলেন, দশজন মেয়েকে এমন প্রস্তাব দেওয়া হলে, তার মধ্যে তিনজন ‘হ্যাঁ’ বলেন। যে সাতজন ‘না’ বলেন, তারা কাজ হারান। এদিকে সেই সাতজন হয়তো বেশি প্রতিভাবান।
সেই সঙ্গে একটি প্রশ্নও তুললেন এনা। জানতে চাইলেন, পুরুষরা কুপ্রস্তাব দিলে অনেক সমালোচনা হয় কিন্তু যেসব মেয়েরা কাজ পাওয়ার জন্য কম্প্রোমাইজ করার রাস্তাটাই বেছে নিচ্ছেন, তাদের এমন পদক্ষেপের বিষয়টা কে সামনে আনবেন?
এরপর বললেন, এই ইন্ডাস্ট্রির চারপাশের লোকজন ভীষণ টক্সিক। ভালো কাজের অভাব। তাই নিয়ে নিরাপত্তাহীনতা। তার উপর কেউ কম্প্রোমাইজ করে কাজ পেয়ে যাচ্ছেন। যিনি কম্প্রোমাইজ করছেন না, তার অবস্থা কী হচ্ছে, একবার ভাবুন।