সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়েছিল গত ১ জুলাই থেকে। অহিংস এই আন্দোলন সহিংস হয় ১৫ জুলাই থেকে। ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ২১ দিনে শিশু, সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীসহ মৃত্যুবরণ করেন ৪৩৯ জন।
১৬ জুলাই রংপুরে আন্দোলনকারী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার সচিত্র ছবি প্রকাশ। সারা দেশে দিনভর ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ। সেদিন সংঘর্ষ মৃত্যুবরণ করেন ৬জন।
এরপর ১৮ জুলাই ৪২, ১৯ জুলাই ৮৬, ২০ জুলাই ৩৮, ২১ জুলাই ২১, ২২ জুলাই ৫, ২৩ জুলাই ২, ২৪ জুলাই ৪, ২৫ জুলাই ৫, ২৬ জুলাই ১, ২৭ জুলাই ১, ২৮ জুলাই ১, ৩১ জুলাই ১, ১ আগস্ট ১, ২ আগস্ট ২, ৩ আগস্ট ১ জন মৃত্যুবরণ করেন। তবে একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করেন রোববার (৪ আগস্ট) ১১৪ জন। সবশেষ ৫ আগস্ট মারা যান ১০৮ জন।
তবে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত হওয়ার খবর আসতে থাকে। এরপর ভোর সোয়া চারটার দিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের প্রস্তাবে ড. ইউনূস সম্মত হয়েছেন বলেও তারা জানিয়েছেন।
এ ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সংগঠিত শিক্ষার্থীদের এ মঞ্চের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের ফেসবুক প্রোফাইলে এক ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ভিডিওতে নাহিদ ও আসিফ ছাড়াও আরও একজন সমন্বয়ককে দেখা যায়।
জানা গেছে, সোমবার (৫ জুন) সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায়। এর পর মঙ্গলবার (৬ জুন) সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) পুনর্বহালে আদালতের দেওয়া রায় বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৯ জুন) সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ, করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি মানতে সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দেন তাঁরা।