বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল এবং যারা সে প্রশ্নগুলো কিনেছে, তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম। তবে বিতর্কিত ৪৬তম বিসিএস বাতিল চাননি তিনি। এ নিয়ে ভিন্নমত জানিয়েছেন অনেকে।
সারজিস আলম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘একটি বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পাস করা যে কতটা অক্লান্ত পরিশ্রম ও সৌভাগ্যের বিষয়, তা শুধু তারাই জানে যারা এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় যারা প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত ছিল এবং যারা সেই প্রশ্নগুলো কিনেছে সে সকল কালপ্রিটদের তথ্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া ও শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
তিনি আরো বলেন, বাকি ১০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী; যারা মেধা, পরিশ্রম এবং যোগ্যতা দ্বারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে; ওই কালপ্রিটদের জন্য তাদের সাথে এত বড় অন্যায় করা কখনোই যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না। এ দুর্নীতির দায় আপনাদেরকেই নিতে হবে।’
সারজিস বলেন, পিএসসি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা এ প্রশ্ন ফাঁস এবং প্রশ্ন ক্রয়ের সাথে জড়িত ছিল তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনুন। কিন্তু অন্য ১০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে এক বছর নষ্ট করার কোন অধিকার আপনাদের নেই।’
প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে যারা জড়িত এবং যারা প্রশ্নগুলো কিনেছে, তাদের শাস্তির দাবি জানানোয় সারজিসের প্রশংসা করেছেন অনেকে। তবে ৪৬তম বিসিএস বাতিলের দাবি না জানানোর পক্ষে বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
ফিরোজ রানা অন্তর মন্তব্য করেছেন, ‘এটা বিতর্কিত পরীক্ষা। অবশ্যই বাতিল করা উচিত। পিএসসি সংস্কার করা উচিত। আর বাকি ১০ হাজার, এটা কিভাবে বুঝবে কে জড়িত আর কে না? এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ-ইউনিটের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল। তারা তো পুরো পরীক্ষা আবার নিয়েছে। একটা সিস্টেম কে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া থেকে বাঁচাতে ১০ হাজার মানুষকে স্যাক্রিফাইস করে আবার পরীক্ষা দেবে না এটা কখনো যুক্তিযুক্ত না?’
তার মতে, ‘পুরো পরীক্ষা বাতিল না করলে প্রশ্ন ফাঁস বেড়ে যাবে। কারণ অনেকেই ধরা ছোয়ার বাইরে থাকবে। যেহেতু পুরো পরীক্ষা বাতিল হয় না তাই অন্যায়কারীরা একটা লিগ্যাল গ্রাউন্ড পাবে যে, দু’একজন ধরা পড়ে। বাকিদের সমস্যা হয় না।’ মো. ফাহিমের ভাস্য, ‘বির্তকিত বিষয়কে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরতে পরীক্ষা বাতিল ও পিএসসির জড়িত সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক। প্রিলি শেষ হয়েছে, রিটেন ভাইভা কোনকিছু হয়নি। এমন বির্তকিত পরিক্ষা বৈধতা দেয়া অন্যায় হবে না ভাই?’
অপরদিকে কাজী নয়ন ইসলাম মন্তব্য করেছেন, ‘কতিপয় অসৎ লোক ও অসদুপায় অবলম্বনকারীর অপরাধের শাস্তি যেন নিরাপদ একজন পরীক্ষার্থীও না পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের পাপ ও অপকর্মের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। এদের উপযুক্ত শাস্তি হয় না বলেই আজ বিসিএসের মতো পরীক্ষাকেও কলঙ্কিত করেছে।’
সারজিসের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে হামিদুল ইসলাম শুভ লিখেছেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি অপরাধী শাস্তি পাক এবং প্রতিটি মেধাবী ও পরিশ্রমী মানুষ মেধার মূল্যায়ন ও ন্যায্যতা পাক।’