ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে টেন্ডার ডকুমেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র চুরির অভিযোগ উঠেছে। গত ১৩ আগস্ট সংস্থাটির অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিথুন চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে কয়েকজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারের রুমে ঢুকে কম্পিউটার থেকে সিটি করপোরেশনের স্পর্শকাতর নানা তথ্য চুরি করে নিয়ে যান।
গত ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এক শুনানির প্রেক্ষিতে লিখিত বিবৃতি দেন ডিএসসিসির সদ্য সাবেক প্রকৌশলী আশিকুর রহমান। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, নিজেদের দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য গত ১২ আগস্ট থেকে কয়েকজন মিলে সিটি করপোরেশনে অস্থিরতা সৃষ্টি করেন। এরপর দিন অর্থাৎ ১৩ আগস্ট জীবন ও মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে ঐচ্ছিক অবসরের কথা জানান।
ছাত্র আন্দোলনে ছেলেকে খুঁজতে যান বাবা, গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু ছাত্র আন্দোলনে ছেলেকে খুঁজতে যান বাবা, গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু
তার ভাষ্য ‘যার ফলে অপূরণীয় সম্মানহীন ঘটে। দরজা খুলে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে রক্ষিত কম্পিউটার হতে গোপনীয় ও ব্যক্তিগত তথ্য নির্বাহী প্রকৌশলী মিথুন শীল চুরি করেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সুযোগের অপব্যবহার করে অনেক সুবিধাবাদী নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ সিটি করপোরেশনে বিশৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজি শুরু করেন। যেখানে বিএনপিপন্থী হিসাবে পরিচিত একজন প্রকৌশলী এবং শ্রমিক দলের নামধারী কয়েকজনকে সামনে রাখা হয়।
ডিএসসিসির অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিথুন চন্দ্র শীল সাবেক মেয়র তাপসের খাস লোক হিসাবে পরিচিত। সেই সুবাধে পেয়েছেন লাভজনক অনেক প্রকল্পের দায়িত্বও। নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তৎকালীন প্রশাসন।
তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নিলে খোলস পাল্টাতে শুরু করেন এই প্রকৌশলী। নিজের দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বাঁচতে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে, ডিএসসিসির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দায়েরের পর তাকে বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে গত ৫ সেপ্টেম্বর আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে ডিএসসিসি।
পরে তার ঐচ্ছিক অবসরের আবেদন মঞ্জুর করেন ডিএসসিসি প্রশাসক মহ. শের আলী। একই দিন এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করেছে সংস্থাটি।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির সদ্য সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কম্পিউটারে টেন্ডার ডকুমেন্টসসহ নানা গোপনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
সেখানে আমার ব্যক্তিগত নানা বিষয় রেখেছিলাম। কিন্তু মিথুন চন্দ্র শীল আমার রুমে ঢুকে কম্পিউটারের স্পর্শকাতর অনেক তথ্য নিয়ে গেছেন। একই সঙ্গে কম্পিউটারটি অকার্যকর করে দিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, আমি যোগদানের পর সিস্টেম এনালাইসিসকে এনে ডকুমেন্টসগুলো ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো কিছুই খোঁজে পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে মতামত জানতে ডিএসসিসির অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিথুন চন্দ্র শীলকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।