আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং তৎসংলগ্ন এলাকাকে হর্নমুক্ত রাখতে বেশ কিছু সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা দেওয়া শব্দদূষণ রোধকল্পে আগামী ১ অক্টোবর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার পরিবেশ সুরক্ষায় একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, বিআরটিএ, ঢাকা ট্রাফিক, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, পরিবেশ অধিদপ্তর, এপিবিএন, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, শিক্ষক, ছাত্র প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংস্থা এই সমন্বিত উদ্যোগের সক্রিয় অংশীজন হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বিমানবন্দরের দক্ষিণ দিকে লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে উত্তর দিকে স্কলাস্টিকা ক্যাম্পাস পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তায় হর্ন বাজানো বন্ধে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নেওয়া পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে সকল স্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন জায়গায় জনসচেতনতামূলক স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও বিলবোর্ড স্থাপন, লিফলেট বিতরণ, ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা,
যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের ভেতরে যথাযথ পার্কিং, বিআরটিএ -এর মাধ্যমে গাড়ি চালক ও গাড়ির মালিকদের ক্ষুদে বার্তা দেওয়া এবং আইন অমান্যকারীদের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থা করা।
অংশীজন হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং তৎসংলগ্ন এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। শব্দদূষণ রোধে হর্ন বাজানোকে নিরুৎসাহিত করতে তারা বিভিন্ন সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করবে, যাতে চালকরা সহজে দেখতে পায়। রাতের বেলায় সাইনগুলো দৃশ্যমান রাখার জন্যও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করবে ডিএনসিসি, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি শব্দ দূষণ রোধে সকল বাস ও ট্রাক ড্রাইভারদের বার্তা প্রদান করবে এবং ট্রাক ও বাস চালকদের মধ্যে শব্দদূষণ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে। পরিবেশ অধিদপ্তর জনগণকে শব্দদূষণ হ্রাসে সক্রিয় ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর অংশ হিসেবে একাধিক জাতীয় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, টেলিভিশনে স্ক্রল ও টিভিসি প্রচার এবং নির্ধারিত এলাকায় লিফলেট বিতরণের ব্যবস্থা করবে। বিআরটিএ ঢাকা শহরের সকল ড্রাইভার এবং মালিকদের কমপক্ষে তিনটি করে ক্ষুদে বার্তা পাঠাবে, যাতে তারা বিমানবন্দর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় শব্দদূষণ না করার বিষয়ে সচেতন হতে পারে।
এ ছাড়া ১ অক্টোবর থেকে আগামী ৭ দিনের জন্য লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে উত্তর দিকে স্কলাস্টিকা ক্যাম্পাস পর্যন্ত তিনটি পয়েন্টে মোবাইল কোর্ট সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। পরিবেশ অধিদপ্তর এর ম্যাজিস্ট্রেটগণ লা মেরিডিয়ান, বেবিচক এর ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিমানবন্দরের সামনের গোলচক্কর এবং বিআরটিএ- এর ম্যাজিস্ট্রেটগণ স্কলাস্টিকা পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের সহযোগিতা করার জন্য থাকবে ট্রাফিক পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষার্থী ও বাস-ট্রাক মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা বলে জানান তিনি।