ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবার নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মে (সরকারি চাকরিতে) নিযুক্ত হতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ওই পোস্টে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া লিখেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো সদস্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত হতে পারবে না। যেসব নিয়োগ এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে, সেখান থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হবে। পরবর্তী সার্কুলারে শূন্য পদগুলোতে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘আসন্ন সার্কুলারগুলোতে সংখ্যাগত দিক থেকে অধিক সংখ্যক প্রার্থীর নিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। ঘুস দিয়ে নিয়োগবাণিজ্য বন্ধে সরকার বদ্ধপরিকর। নিয়োগের জন্য ঘুস দেওয়া এবং নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।’
গতকাল বুধবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
গেজেটে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সম্পর্কিত প্রামান্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।
সেখানে আরও বলা হয়, ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।
সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
গেজেটে বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করলো। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।