ভারতের সিকিমে পাহাড় ধসের কারণে তিস্তা নদীর ওপরে নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা বাঁধে পানির চাপ বাড়লেও তিস্তায় বন্যার শঙ্কা নেই। তিস্তা পাড়ের মানুষদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র বলছে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকাল ৩টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।
যা বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার (৭৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ৬৫সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
জানা গেছে, ভারতের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে তিস্তাপাড়ের হাজারও মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন। উজানের ঢল যে কোনো সময় নীলফামারী ও লালমনিরহাটে প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে- এমন শঙ্কায় নির্ঘুম রাত পার করছে।
এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকেও অনেকে একই পোস্ট করতে দেখা যায়- ‘সিকিম ভেসে যাচ্ছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধার দিকের মানুষেরা ইমিডিয়েট সর্তক হওয়া জরুরী। ইতোমধ্যেই ভারতের সিকিম ভেসে গেছে। যে কোনো সময় তিস্তার ব্যারেজ খুলে দিতে পারে ভারত।’
তিস্তাপাড়ের মোহাম্মদ আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, অনেকে বলছেন, ভারতের বাঁধ ভেঙে তিস্তা নদীতে বন্যা শুরু হবে। তাই দুদিন ধরে আতঙ্কে আছি। আজ এলাকায় মাইকিং’এ বলা হয় বন্যার শঙ্কা নেই। এতে কিছুটা চিন্তামুক্ত হই আমি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা দেশ রূপান্তরকে বলেন, তিস্তার পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। প্রায় ২৫ দিনে গড়ে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তাপাড়ের মানুষদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য জনপ্রতিনিধি এলাকায় মসজিদ মন্দিরের মাধ্যমে মাইকিং করা বলা হয়েছে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ দেশ রূপান্তরকে জানান, আমরা নজরদারি রেখেছি তিস্তায়। পানি স্বাভাবিক রয়েছে। তিস্তা পারের জনসাধারণকে গুজব বিশ্বাস না করার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।