জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারী নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের ও বিচারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন আট শিক্ষার্থী। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সশরীরে এসে আশ্বাস প্রদান না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা এই অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরে দুপুর ২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে তারা বৃষ্টিতে ভিজে অনশন চালিয়ে যেতে থাকেন।
সরজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ৩ জন শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যের মূল বেদিতে বসে আছেন। এসময় তাদের বৃষ্টিতে ভেজার কারণে ঠান্ডায় কাঁপতে দেখা যায়। ত্রিপল বা ছাতার নিচে বসে অনশন করতেও অপরাগতা প্রকাশ করেন তারা।
অনশন পালনকারীরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রেজোয়ান আহমেদ রিফাত, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সহ-সমন্বয়ক আশিকুর রহমান জীম, আইন বিভাগের রেদোয়ানুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী এবং সহ-সমন্বয়ক রিফাত রিদওয়ান, একই বিভাগ ও সেশনের শিক্ষার্থী ও সহ-সমন্বয়ক মো. আরমানুল ইসলাম, সোহরাওয়ার্দী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইমাম হোসাইন ইমন, ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী মিনহাজুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজের শিক্ষার্থী সুহাইল মাহদীন।
অনশন কর্মসূচি শুরু করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সহ-সমন্বয়ক আশিকুর রহমান জীম। পরে বাকিরা তার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে অনশনে যোগ দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রেজোয়ান আহমেদ রিফাত বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সাধারণ ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে কোন শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্বৈরাচারের কথায় যারা আমাদের উপর হামলা করেছে, অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে শহীদ করেছে, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরা আজকে অনশনে বসেছি।
সহ-সমন্বয়ক আশিকুর রহমান জীম বলেন, ৫ আগস্ট দেশের স্বাধীনতা আসলেও এখনো সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কিছু মামলা হলেও তাদের গ্রেপ্তারের কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। আমরা আজকে অনশনে বসেছি যেন এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতার নিয়ে আসা হয়।
কতক্ষণ এখানে অবস্থান করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সশরীরে এখানে এসে যদি আমাদেরকে আশ্বস্ত না করেন, তাহলে আমরা এখান থেকে সরবো না। তিনি অফিসে বসে ঘোষণা দিলেও হবে না। অফিসের ঘোষণার অপেক্ষা করলে আমরা আজকে এখানে বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান করছি না।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেদোয়ানুল ইসলাম বলেন, দেশের স্বাধীনতা এসেছে, এখন সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে কেন এত কালক্ষেপণ আমি জানি না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কেন তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিচ্ছেন না সেটা বুঝতে পারছি না। আমরা চাই তিনি যেন এখানে এসে আমাদেরকে নিশ্চিত করেন যে সন্ত্রাসীদের অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। অন্যথায় আমরা আমাদের এই অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।