গাজীপুরের পানিশাইল এলাকার একটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এ সময় শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকেরা জিরানি বাজারের পাশে অ্যামাজন নিট ওয়্যার নামের একটি কারখানায় আগুন দেয়।
বকেয়া বেতন ও কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ থেকে অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানায় আগুন দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ফায়ার সার্ভিস।
সোমবার কাশিমপুরের বড়ইবাড়ি এলাকার ওই কারখানায় আগুন দেওয়া হয়। আগুনে পুড়েছে কারখানাসহ পাশের শ্রমিক কলোনির কয়েকটি ঘর।
এরআগে, আজ সকাল থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা তিনদিনের মতো সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছিল বেক্সিমকোর কারখানার শ্রমিকেরা। এর জের ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পানিশাইল এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা আরেকটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত আটজন।
শ্রমিক, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেক্সিমকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা সকাল থেকে গাজীপুর মহানগরীর চক্রবর্তী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ কারণে আশপাশের অন্তত ২০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এ ছাড়া ১ নভেম্বর থেকে পানিশাইল এলাকার ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার কারখানা খুলে দেওয়া হলেও দুপুরের পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা কারখানা অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখতে পান।
এ সময় শ্রমিকেরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। একই সময়ে একই সড়কের আলাদা জায়গায় বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকেরাও অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডরিন ফ্যাশন ও বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হন। আহত শ্রমিকদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে শ্রমিকেরা পানিশাইল ও কলতাসুতি এলাকায় ঢুকে পড়ে এলাকার লোকজনদের মারধর করেন।
এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। বেশ কিছু সময় ত্রিমুখী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় আশুলিয়া এলাকার অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, জিরাবো এলাকায় বিগবস কারখানার সামনে একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে কাশিমপুর থেকে দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এছাড়া আশুলিয়ায় অ্যামাজন নিটওয়্যার কারখানায় আগুন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নেভানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।