22 C
Dhaka
Tuesday, November 26, 2024

গণভবন দেখলেন প্রধান উপদেষ্টা, জাদুঘরের কাজ দ্রুত করার নির্দেশ

প্রবল গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর জনরোষে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া তার সরকারি বাসভবন ‘গণভবন’কে দ্রুত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রায় তিন মাস পর গণভবন পরিদর্শনে গিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টাদেরকে জাদুঘর বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাদুঘরের প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে বলেছেন।

‘গণভবন’কে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে গত ৫ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে।

জাতীয় সংসদের উত্তর কোণে শেরেবাংলা নগরের প্রাসাদোপম গণভবন নামের বাড়িটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন ছিল। প্রবল গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে গত ৫ অগাস্ট এই বাড়ি থেকেই পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তারপর জনতার রুদ্ররোষে তছনছ হয় পুরো গণভবন, লুটপাট হয় ভবন ও ভবন এলাকার সব কিছু।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল গণভবন, যা তার দমন-পীড়ন এবং নিষ্ঠুর শাসনের প্রতীক হয়ে ওঠে।

ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনকালে ইউনূস বলেন, “এই জাদুঘরে তার অপশাসনের স্মৃতি এবং তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার সময় মানুষ যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল তা সংরক্ষিত থাকবে।”

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার মুহূর্তে, ৫ অগাস্ট হাজার হাজার বিক্ষোভকারী গণভবনে প্রবেশ করে। তারা গণভবনের দেয়াল ও কামরায় তাদের ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়ে গ্রাফিতি আঁকে এবং ‘খুনি হাসিনা’ সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান লিখে রেখে যায়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গণভবনের জাদুঘরে আয়না ঘরের একটি প্রতিরূপ তৈরি করা উচিত, যেখানে শেখ হাসিনার শাসনামলে কুখ্যাত নিরাপত্তা সংস্থাগুলো গোপনে শত শত ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধী কর্মীদের আটকে রাখত।

“আয়না ঘরটি দর্শকদের শেখ হাসিনার গোপন বন্দিশালার নির্মমতার কথা মনে করিয়ে দেবে।”

এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া হাসিনা শাসনের অপকর্মগুলো জাদুঘরে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

তিনি বলেন, তারা অন্যান্য দেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও পরামর্শ করছেন, যারা তাদের নিজ নিজ দেশে বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থান স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছেন।

জাতীয় সংসদের উত্তর কোণে শেরেবাংলা নগরের প্রাসাদোপম গণভবন নামের বাড়িটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন ছিল। প্রবল গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে গত ৫ অগাস্ট এই বাড়ি থেকেই পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তারপর জনতার রুদ্ররোষে তছনছ হয় পুরো গণভবন, লুটপাট হয় ভবন ও ভবন এলাকার সব কিছু।

‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন ২০০৯’ অনুযায়ী গণভবনকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তাদের বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন।

গণভবনে বসবাসকারী একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সরকারপ্রধান হিসেবে এখানেই বাস করতেন তিনি। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সংস্কারের সম্পন্ন হলে ২০১০ সালে পরিবারসহ গণভবনে ওঠেন শেখ হাসিনা। সেই থেকে ৫ অগাস্ট দুপুরে পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেটিই ছিল তার ঠিকানা।

ক্ষমতার দুই দফাতেই আইন বলে গণভবনকে বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার হিসেবে শেখ হাসিনার মালিকানায় নেওয়া হয়। যদিও এটি সরকারের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় হিসেবে তৈরি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ