সাত বছর বয়সের খুশী তিন দিন আগে হারিয়ে যায়। এরপর মিরসরাই থানা পুলিশের হেফাজতে থাকে। প্রথমে ঠিকমত নিজের নাম, ঠিকানাও বলতে পারেনি। পরে খোঁজ নিয়ে তার নাম, ঠিকানা পাওয়া যায়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানার বৌ বাজার এলাকা থেকে হারিয়ে যায় সাত বছরের শিশু খুশি। খুশির বাবা মহরম আলী পেশায় রিকশাচালক, মা রেশমী বেগম গৃহিণী।
পরে খুশিকে নানা তৎপরতায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে মিরসরাই থানা পুলিশ। সেখানে খুশিকে মায়ের মতোই আদর যত্নে রাখেন কনস্টেবল ফরিদা আক্তার। থানাতে মাতৃস্নেহের পরশ পাওয়াতে বেশ আনন্দিত খুশির পরিবার।
মিরসরাই থানার উপ-পরিদর্শক আবুল খায়ের বলেন, বুধবার (২২ মে) রাত ১০টায় মিঠাছড়া বাজারে ঘুরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় একজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে রাত ১২টায় খুশিকে আমি থানায় নিয়ে আসি। পরদিন বৃহস্পতিবার (২৩ মে) উপজেলা সমাজসেবা অফিসকে নিখোঁজ খবরটি জানানো হয়। এরপরই পুলিশ ও সমাজসেবা অফিস থেকে খুশির পরিবারের খোঁজ পেতে চালানো হয় তৎপরতা।
এর আগে খুশিকে থানায় সন্তানের মতো মমতা দিয়ে আগলে রাখেন কনস্টেবল ফরিদা আক্তার। গোসল করিয়ে নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে মায়ের ভূমিকা নেন তিনি। স্নেহপরায়ণ হয়ে খুশিকে নিজের কাছে রাখেন ফরিদা।
ফরিদা আক্তার জানান, খুশি যতক্ষণ থানায় ছিল নিজের সন্তানের মতো যত্ন করেছি। মনে হয়েছে আমার সন্তান। মাকে কাছে না পাওয়ার কষ্টটুকু তাকে বুঝতে দেইনি। গোসল দিয়ে নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে রেখেছি। সবশেষ তার মা-বাবার কাছে পৌঁছে দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। খুশি হয়তো আমাকে মনে রাখবে সব সময়।
ফরিদা আক্তার মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মহিনুল হকের স্ত্রী।
খুশির বাবা মহরম আলী বলেন, খুশি, হাসি, জান্নাতুল ফেরদৌস, মনিকা চার সন্তান নিয়ে আমার সংসার। খুশি পত্রিকা বিক্রি করে। গত তিন দিন খুশিকে না পেয়ে আমরা পাগলের মতো খুঁজেছি। শুক্রবার (২৪ মে) তাকে কাছে পেয়েছি। পুলিশকে ধন্যবাদ আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।
মিরসরাই উপজেলার সমাজসেবা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো: সাহাব উদ্দিন জানান, আমরা খুশির পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্নভাবে চেষ্টা শুরু করি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে চট্টগ্রাম বৌ বাজার থেকে ফোনে আদনান চৌধুরী নামে একজন খুশিকে পেয়েছেন বলে জানান। পরে তার দেয়া তথ্যানুযায়ী আমরা খুশিকে মা-বাবার হাতে তুলে দিয়েছি। পুলিশও খুশিকে যত্নে রাখেন।
মিরসরাই প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম জানান, খুশিকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। এভাবে সবাই একোথে চেষ্টা করলে অনেক কিছুই সম্ভব।