জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সব কার্যক্রমে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান ফটকের মূল অংশে তালা দিয়ে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কোনো ধরনের যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছে না। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য পকেট গেইট খোলা রাখা হয়েছে।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন, ভাষা শহীদ রফিক ভবন, বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের অধিকাংশে ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভবনগুলোতে প্রবেশ করতে পারেনি।
এদিকে, ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিভাগে তালা দিয়েছেন। এছাড়া অনেক বিভাগের সামনে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেরা বসে পড়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা চলবে না। গত রাতেই তারা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন। আজ তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অন্যদিকে গতকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত গণঅনশনে অংশ নেওয়া ১৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী হাসপাতালের বেড থেকে পুনরায় অনশন স্থলে এসে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী অনশন ভেঙেনি বলে জানা যায়।
এছাড়া সোমবার দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বোটানি ডিপার্টমেন্টের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী একে এম রাকিব জানান, দুপুর দেড়টার মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো প্রতিনিধি না এলে সচিবালয়মুখী পদযাত্রা করবেন তারা।
এর আগে দুপুরে গণঅনশনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে অনশনস্থলে এসে শেষ হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই অনশনে, প্রশাসনে কি করে’, ‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে, প্রশাসনের খবর আছে’, আমার ভাই হাসপাতালে, প্রশাসন কি করে’, জবিয়ান জবিয়ান, এক হও লড়াই কর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
উল্লেখ্য, গতকাল সকাল ৮টা থেকে সেনাবাহিনীর হাতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি পালন আসছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তিন দফা দাবিগুলো হলো-
১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।
৩. যতদিন আবাসন ব্যবস্থা না হয় ততদিন পর্যন্ত ৭০% শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।