কক্সবাজারের চকরিয়ায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা প্রায় বাকরুদ্ধ, মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
তানজিম নিহতের খবর এলাকায় জানাজানি হলে, তার টাঙ্গাইলের বাড়িতে ভিড় করেন আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসি। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে প্রায় বাকরুদ্ধ তানজিমের বাবা সরোয়ার জাহান। তিনি বলেন, সেই ছিল বাড়ির একমাত্র উপার্জন করার লোক। তাই আমি আজ অসহায়। আমি এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও ফাঁসি চাই। এইরকম মৃত্যু যেন আর কারো না হয়।
এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নিহত তানজিমের মা নাজমা বেগম বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকারপ্রধান ও সেনাপ্রধানের কাছে আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। যারা তার সঙ্গে ছিল। তারা কেনো আমার ছেলেকে রক্ষা করতে পারলো না। তাদেরও বিচার চাই আমি।
উল্লেখ্য, নিহত সেনাকর্মকর্তা তানজিমই বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। তার একমাত্র বোন সুচি, তিনি ঢাকায় স্বামীসহ থাকেন।
ইতোমধ্যেই ঘাটাইল শহীদ সালাহউদ্দিন সেনানিবাস থেকে ঊদ্ধর্তন সেনা কর্মকর্তারা নিহত তানজিমের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানিয়েছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকালে বাদ আছর বোয়ালী মাদরাসা মাঠে জানাযা নামাজ শেষে মাদরাসা গোরস্থানে দাফন করা হবে। তবে, এখনও নিহত তানজিমের মরদেহ টাঙ্গাইলে পৌঁছায়নি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪) রাত আনুমানিক ৩টায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চকোরিয়া উপজেলার অন্তর্গত ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতির খবর পেয়ে চকোরিয়া আর্মি ক্যাম্প হতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল দ্রুততার সাথে গমন করে।
আনুমানিক ভোর ৪টায় মাইজপাড়া গ্রামে অভিযান পরিচালনা করার সময় ৭/৮ সদস্যের একটি ডাকাত দল সেনা টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার সময় লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন (২৩) ডাকাতদলের কয়েকজনকে তাড়া করেন। এসময় ডাকাতদলের সদস্যরা লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জনের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করলে গুরুতর আহত হয় এবং এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জনকে উদ্ধার করে মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কর্তৃক মৃত ঘোষণা করা হয়।
লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন পাবনা ক্যাডেট কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপনান্তে ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সাথে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি হতে ২০২২ সালের ৮ জুন আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করেন।