25 C
Dhaka
Wednesday, February 19, 2025

ইএফটিতে বেতন পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের দুঃসংবাদ দিল মাউশি

দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটিতে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে দুই ধাপে আড়াই লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতন দেওয়া হয়েছে।

আগামী সপ্তাহে আরও ৮৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী বেতন পাবেন। ইএফটিতে বেতন পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য সংশোধনে সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যে তথ্য সংশোধিত না হলে ইএফটিতে বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

মঙ্গলাবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) মাউশির ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট উইং, বেসরকারি মাধ্যমিক শাখা এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট উইংয়ের উপ-পরিচালক আবু সাঈদ মজুমদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারীদের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে ভুল থাকার পরও তাদের বেতন দেওয়া হয়েছে। এই ভুলগুলো সংশোধনের জন্য দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে তথ্য সংশোধন না করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। যতদিন তথ্য সংশোধন না হবে, ততদিন তারা বেতন পাবেন না।’

মাউশির একটি সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটিতে বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে ইএমআইএস সেলে থাকা তথ্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আইবাস-এ পাঠানো হয়েছে। আইবাস-এর পক্ষ থেকে তথ্যগুলো প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে। তথ্য যাচাইয়ের সময় অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও শিটের তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের অমিল দেখা গেছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্রে যেভাবে নাম-ঠিকানা মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে, সে অনুযায়ী তথ্য সংশোধন করতে হবে। যে মোবাইল নম্বর জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া হয়েছে, সেই মোবাইল নম্বর সচল রাখতে হবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও একই মোবাইল নম্বর থাকতে হবে। এগুলো আগামী মার্চ মাসের মধ্যে সংশোধন করতে হবে।’

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ‘যারা ভুল তথ্য দিয়ে এমপিও করবেন তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। একই সঙ্গে তথ্য সংশোধন না করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ হয়ে যাবে। শিক্ষক-কর্মচারীরা আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে ড্যাশবোর্ডে লগ-ইন করার পর কোন তথ্য সংশোধন করতে হবে সেটি দেখতে পারবেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।’

জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।

ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতন দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার ৭০০ শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাবেন।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি স্কুল-কলেজের ৩ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য যাচাই করছে মাউশি। এর মধ্যে প্রথম ধাপে এক লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটিতে বেতন পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী বেতনের মেসেজ পেয়েছেন। সে হিসেবে এখনো বেতনের বাইরে রয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। দ্রুত বেতনের দাবি জানিয়েছেন বেতন না পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ