পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক নারী ইউপি সদস্যের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে বাড়িছাড়া হওয়ার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দেবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তি।
আবু সাঈদ পামুলী ইউনিয়নের কাঁঠালতলী এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। অভিযোগ ওঠা দুজন হলেন- উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনি ভূষণ রায় ও আবু সাঈদের স্ত্রী সাবেক নারী ইউপি সদস্য রাশেদা বেগম।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে আমি ওমানে যাই। সেখানে থাকার সময়ে দেশে স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছি। পরে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারি চেয়ারম্যান দিনে ও রাতে বিভিন্ন সময়ে সময় কাটাতে আসতেন আমাদের বাসায়। শুধু তাই নয়, স্বামী না থাকার সুযোগে আমার স্ত্রী রাশেদা চেয়ারম্যানের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
বিষয়টি জানার পর আমি ২০২১ সালে দেশে ফিরে আসি। দেশে এসে বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ ও পরকীয়ার সম্পর্কের বিষয়ে স্ত্রী রাশেদাকে প্রশ্ন করলে সে সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চান। প্রথমবার শুধরানোর সুযোগ দিই স্ত্রীকে। যদিও চার বছরে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার সঠিক হিসাব দিতে পারেনি।
এরপর চাকরির জন্য ঢাকায় চলে যাই। ঢাকায় থাকার সময়ে গত সাত মাস আগে মণি ভূষণ রাশেদাকে নিয়ে ভারতে যান বলে জানতে পারি। বিষয়টি নিয়ে পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলি এবং রাশেদার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার ব্যাপারে অনুরোধ জানাই। এতেও কাজ হয়নি। বরং তাদের পরকীয়ার সম্পর্ক এখনও টিকে আছে।
গত ২০ মে আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে এলে আমাকে আর বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়নি আমার স্ত্রী রাশেদা। উল্টো চেয়ারম্যানকে ফোনে বিষয়টি জানালে চেয়ারম্যান একজন গ্রাম পুলিশকে সেখানে নিযুক্ত করেন।
এ ছাড়া পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে রাশেদা বেগম এখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে অভিযোগ করেছেন আবু সাঈদ।
রাশেদা বেগমের স্বামী আবু সাঈদ বলেন, এলাকার সবাই চেয়ারম্যান আর আমার স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্কের ব্যাপারে বলবে। আমার রক্ত পানি করা পরিশ্রমের টাকায় আমার স্ত্রী আমার নামে জমি না কিনে নিজের নামে চার বিঘা জমি কিনেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মণি ভূষণ রায় বলেন, সাবেক ইউপি সদস্য ছিল রাশেদা বেগম। এ জন্য প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে যাওয়া হতো, তবে গত ৬ মাস থেকে যাইনি।
রাশেদা বেগম বলেন, সংসারে একটু কলহ হতেই পারে। আমার স্বামী অন্যের কথায় এসব করছেন। আর বসতভিটা আমি আমার টাকায় কিনেছি। সুদের ব্যবসা এবং ভাইবোনদের কাছ থেকে এ টাকা এসেছে। বাসায় চেয়ারম্যানের আসা-যাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা।
দেবীগঞ্জ থানার ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, অভিযোগের সত্যতা জানতে সরেজমিন কাঁঠাতলী এলাকায় গেলে চেয়ারম্যান ও রাশেদার পরকীয়ার সম্পর্কের বিষয়ে একাধিক ব্যক্তি তা নিশ্চিত করেন।