‘আমার বাবার লাশের এক টুকরো মাংস চাই। যে মাংসের টুকরো আমি ছুঁয়ে দেখতে পারি। সেই মাংসের টুকরোকেই বাবা মনে করে জানাজা করাতে চাই’, এভাবেই মৃত বাবার জন্য আহাজারি করেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল ৫টার দিকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এমপি আনারকে নৃশংসভাবে হত্যার সুষ্ঠু বিচার, হত্যার পরিকল্পনাকারীকে আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ কথা বলেন ডরিন।
ডরিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাবা হারানোর ব্যথা-কষ্ট বোঝেন। তিনি আমার বাবা হারানোর বেদনা বুঝবেন। তার বাবার হত্যার বিচার করেছেন, আমার বাবা হত্যার বিচারও করবেন। এর বিচার অবশ্যই হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। গতকালও কথা বলেছি। আমরা আইনের আশ্রয় নেব। প্রধানমন্ত্রী আছেন, আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ অভিভাবকরা আছেন, তারা আমাদের পরামর্শ দেবেন এবং তারা অবশ্যই তাদের দলীয় এমপি হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন।
‘আমি শুধু বাবার মুখটি দেখতে চেয়েছিলাম’
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় নিজ বাসার সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি। সে সময় তিনি বলেন, আমি আমার বাবার মৃতদেহের মুখটি একবার দেখতে চেয়েছি, কিন্তু হত্যাকারীরা এত নৃশংসভাবে বাবাকে হত্যা করেছে। তারা এত ভয়ঙ্করভাবে হত্যার পর বাবার দেহটাকে টুকরো টুকরো করে ফেলে দিয়েছে। আমি দেখতেও পারব না।
তিনি বলেন, কালীগঞ্জের মানুষ তাদের প্রিয় নেতাকে হারিয়েছে, তারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করবে। কিন্তু সেই প্রতিবাদ বিক্ষোভে জনগণের ভোগান্তির কোনো শঙ্কা নেই। কুকুর মানুষকে কামড়ায়, মানুষ তো আর কুকুরকে কামড়ায় না। প্রধানমন্ত্রী আছেন, দলের সর্বোচ্চ অভিভাবকরা আছেন, তারা যেভাবে পরামর্শ দেবেন সেভাবেই হবে। আর আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইন অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করবে।
এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক নাকি ব্যবসায়িক কারণ রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডরিন বলেন, আমি ব্যবসায়িক বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আগে মূল পরিকল্পনাকারী ধরা পড়ুক, তদন্তের পর তার মুখ থেকেই বেরিয়ে আসবে কেন তারা আমার বাবাকে হত্য করল।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শিবলী নোমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মতি, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসেনসহ আওয়ামী লীগের সকল ইউনিটের নেতাকর্মী।