বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পরিচালক সারজিস আলম বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় দলীয় রাজনীতি চর্চার জায়গা হতে পারে না। দলীয় লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতির বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। আমরা আমাদের প্রতিনিধি তৈরি করবো, নেতা তৈরি করবো না। গত ১৬ বছরে যখনই কেউ নেতা হয়েছে- তার পা মাটি স্পর্শ করেনি। আমরা ওই ধরনের কোনও নেতা চাই না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নূর হোসেন হল মাঠে ‘জুলাই বিপ্লবকে সমুন্নত রাখতে এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিপ্লবী ছাত্র জনতার করণীয়’ শীর্ষক ছাত্র সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, যদি রাজনৈতিকভাবে কাউকে সচেতন করতে তুলতে হয়, আপনি যদি উত্তরবঙ্গের নেতৃত্ব তৈরি করতে চান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেন। যখন দলীয় লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি হয়- সেই সময়ে যদি কাউকে নেতা মনোনয়ন দেয়া হয় (নির্বাচিত নয়), ওই নির্দিষ্ট নেতার মধ্যে একটি জিনিস থাকে, যে আমাকে নেতা বানিয়েছে তাকে কীভাবে সন্তুষ্ট করা যায়।
তিনি বলেন, আমি যদি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হই, যত শিক্ষার্থীই থাকুক, প্রশাসনের যেই থাকুক, কর্মকর্তা-কর্মচারী যেই থাকুক, তাদের অনেক স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও আমার মাথায় চিন্তা থাকবে- যে আমাকে বানিয়েছে, যে আমাকে ওই চেয়ারে বসিয়েছে কীভাবে তার স্বার্থ পূরণ করে দেওয়া যায়।
আমরা যদি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব চাই, আমরা যদি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তরবঙ্গে মাওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মতো রাজনৈতিক নেতৃত্ব চাই, তাহলে আবারও ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।
এই সমন্বয়ক বলেন, ওই ছাত্র সংসদ নির্বাচন আমি নির্বাচিত হয়েছি, শিক্ষার্থীদের ভোট দিয়ে। আমি তাদের কাছে দায়বদ্ধ। আমি তাদের প্রত্যেকটি প্রশ্নের জবাবদিহি করতে দায়বদ্ধ এবং আমি যদি সেটি করতে না পারি তাহলে আমি ব্যর্থ হিসেবে প্রমাণিত হবো- নয়তো পরের বছর পরাজিত হবো। এটাই তো হওয়া উচিত। এই চর্চাটি আমাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে থাকা উচিত।
তিনি বলেন, আমার যদি পায়ে হেঁটে চলার মানসিকতা না থাকে, আমাকে যদি শোডাউন দিয়ে চলতে হয়। তাহলে আমি সাধারণ শিক্ষার্থীর কাতারে নাই।