দেশের নয়টি সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের গভীরে গেঁথে থাকা সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের লক্ষ্যে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে বিশেষ নিরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই তথ্য জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকগুলোর চলমান তারল্য সংকট নিয়ে কথা বলার সময় তিনি এ কথা জানান।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাপক অনিয়মের কারণে জর্জরিত দেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কারের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি গভর্নরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করেছে।
‘প্রাথমিকভাবে আমরা টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তিন ধাপে নয়টি ব্যাংকের নিরীক্ষা করব। প্রথম ধাপে ইসলামী ব্যাংকের নিরীক্ষা করা হবে,’ গভর্নর বলেন।
তিনি বলেন, দেশে ব্যাংকের সংখ্যা কমানোর জন্য ছোটখাটো সংকটগ্রস্ত ব্যাংকগুলো একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।
টাস্কফোর্স বেশ কয়েকজন বিদেশি পরিদর্শক নিয়োগের মাধ্যমেও তার কার্যক্রম শুরু করবে।আহসান এইচ মনসুর জানান, টাস্কফোর্স সম্পদ ক্ষয়ের কারণ চিহ্নিত করবে, সম্পদের অবস্থান খুঁজে বের করবে এবং সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করবে।
তিনটি দলের কর্মকর্তারা এই পরিদর্শনের কাজে অংশ নেবেন।উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে পরিচালিত এই উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি পরিদর্শকদেরও সম্পৃক্ত করা হবে।
গভর্নর জোর দিয়ে বলেন, টাস্কফোর্স প্রাথমিকভাবে জাল বা আসল নামে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের বিষয়গুলো চিহ্নিত করার ওপর মনোযোগ দেবে।
গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন মেনে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করা হবে।
আহসান এইচ মনসুর ইঙ্গিত দেন যে, চলতি সপ্তাহে এবং আগামী মাসে নীতিগত হার আরও বাড়ানো হবে।
গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে অবস্থান করছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশ অনুযায়ী বারবার নীতিগত হার বাড়ানো হয়েছে।
গভর্নর বলেন, ব্যবসায়ীরা মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের ওপর জোর দিলেও, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান মুদ্রানীতি কার্যকর রয়েছে তবে এটি আরও কিছুটা কঠোর করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী সাত থেকে আট মাসের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৫-৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।